পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
নাটাই

ভয় হলাে। তিনি চমকে উঠে চোক তুলে বল্লেন, না না, ও তােমার জিনিস তােমার ঠেঁয়ে থাক্; আমি কোথায় হারিয়ে ফেলবাে। এই ব’লে, গিন্নির শােক আবার উথলে উঠলো। ওহাে-হোঃ! আমি কি আর এখন বাক্স খুলতে পারবো গো! আমি যে তাদের কত কাপড়, জামা ও খেলনা কিনে দিয়েছি, সবই তাে আমার বাক্সে আছে, তা আমি এখন কেমন করে দেখবাে গাে!

 আঁচলে মুখ মুছে গিন্নি শান্ত হলেন। ধনপতি ভাবলেন, বড় ছেলে মেয়েকে ও তাদের বর-কনেকে আজ হঠাৎ নৌকা থেকে বার ক’রে কাজ নাই। এই রাক্ষসীর রঙ্গ আরও একটা দিন দেখা যাক। সে দিন তিন চার নৌকা থেকে বাণিজ্যের জিনিসপত্র মণিমুক্তো জহরত ঘরে তুলতে তুলতে অনেক রাত হয়ে গেল। গিন্নির মনের ভিতর আনন্দের সীমা নাই। এত ধন দৌলত! এ সবই আমার নিজের ছেলে মেয়েরা পাবে। সওদাগর বিদেশে গিয়ে বুড়ো বয়সে আফিম ধরেছেন; কথন কি হয় বলা যায় না। এই সময় কিছু টাকাকড়ি নিজের কাছে লুকিয়ে রাখলে অসময়ে কাজে লাগবে। এই ভেবে তিনি বেশী রাত্রে চুপে চুপে বিছানা হতে উঠলেন। বাড়ীর পাশে অনেক দিনের পুরানাে এক পাতকুয়াে ছিল। তিনি তার ভেতর অনেক সােণারূপাে, মণিমুক্তো ও টাকার তােড়া ফেলতে লাগলেন। কিন্তু বিধাতার নির্ব্বন্ধ! খুব আঁধার রাত, গিন্নি পা ফসকে পাকুয়াের ভেতর পড়ে গেলেন।

 পরদিন সকালবেলা গিন্নির অপমৃত্যু ও অপমৃত্যুর কারণ প্রকাশ হয়ে পড়লাে। কারুর মনে বিশেষ দুঃখ নাই। কিন্তু