পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
নাটাই

ভালই হলো, এখনি জিজ্ঞেস কচ্চি; এতক্ষণ পর কথা কইবার বেশ সুবিধে হলো। তখন ব্রত শেষ কবে ধনপৎকুমারী প্রদীপ নিবিয়ে দিলেন। অমনি তাঁরা আশ্চর্য্য হয়ে দেখলেন, ভোর হয়েছে! ঘরের চা’দ্দিকে মেয়েদের পায়ের শব্দ! শ্রীমন্ত নিরাশ হলেন, আর কথা কওয়া হলো না।

 পরদিন বাসি-বিয়ের পর ধনপৎকুমারী বরের সঙ্গে নৌকায় উঠে শ্বশুর বাড়ী চল্লেন। নৌকার ভিতর প্রথম কথা কওয়ার সুযোগ খুঁজে শ্রীমন্ত বল্লেন, কাল এত রাত্রে তুমি কি কোরছিলে? কুমারী লজ্জায় মাথা হেঁট করে ধীরে ধীরে বলেন, “নাটাই ব্রত কোরছিলুম।” শ্রীমন্ত জিজ্ঞেস কল্লেন, এ ব্রত কল্লে কি হয়? কুমারীর ক্রমেই সাহস হলো; তিনি উত্তর কলেন, এ ব্রত কল্লে সব হয়। এ ব্রত কল্লে যে যা চায়, সে তাই পায়। তাই শুনে শ্রীমন্ত রহস্য ক’রে হেসে বল্লেন, তোমার ব্রত করে দেখছি ‘হারানো গোরু’ও পাওয়া যায়। ধনপৎকুমারী এবার মাথা তুলে বল্লেন, হাঁ, ঠিক কথা, আমার নাটাই ঠাকরুণের কৃপায়, গোরু ছাগল ভেড়া হারিয়ে গেলে আর খুঁজতে হয় না, পরদিন ভোরে তারা নিজেই বাড়ী ফিরে আসে। শ্রীমন্ত আবার রহস্য ক’রে বল্লেন, আচ্ছা, জিনিস হারিয়ে গেলে যদি আবার পাওয়া যায় তবে তোমার গলার ওই সুন্দর গজমুক্তোর হার, হাতের হীরের বালা ও আরো কএকখানি গহনা দাও, এই পাণের ডিবেয় বন্ধ করে নদীতে ফেলে দি, সাতদিন পরে বাড়ী পঁহুছে গহনাগুলো আবার তোমার কাছে দেখতে চাই। নাটাই ঠাক্‌রুণের বড়াই এবার বোঝা যাবে। কেমন? রাজী আছ? ধনপৎকুমারী আর কথাটি না কোয়ে, তখনি হার, বালা ও গায়ের