পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনপৎ-কুমারী
১০১

অনেক গহনা খুলে পাণের ডিবেয় বন্ধ করে “জয় নাটাই ঠাক্‌রুণের জয়” বলে নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। শ্রীমন্ত আশ্চর্য হয়ে বল্লেন, কল্লে কি! কল্লে কি! আমি শুধু রহস্য করে বােলছিলেম বই তাে নয়!

 সাত দিন পরে তাঁরা বাড়ী পঁহুছিলেন। আজ বৌভাত। অনেক লােকের নেমন্তন্ন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করে কোথাও মাছ পাওয়া গেল না। এখন উপায়! শ্বশুর বড় ভাবনার পড়লেন। তখন বউ শ্বশুরকে ব’লে পাঠালেন, আপনার কোন চিন্তা নাই; নাটাই ঠাক্‌রুণকে স্মরণ ক’রে জেলেরা নদীতে জাল ফেলুক, তা হলে অনেক মাছ পাওয়া যাবে। জেলের তাই কল্লে। আর তখনি তারা একটা পাঁচ মণ ভারি ‘রাঘব বোয়াল’ মাছ সকলে মিলে বয়ে নিয়ে এসে, গা মুছে, গামোছার বাতাস খেতে লাগলো। সকলে দেখে অবাক! এত বড় মাছ কেউ কুটতে সাহস কল্লে না। বউ বল্লেন, আমিই কুটবাে। বউ বঁটি নিয়ে মাছের গলা অর্দ্ধেক কাটতেই সেই রূপাের বড় পাণের ডিবে বেরিয়ে পড়লল! তার ভেতর বৌয়ের সব গহনা পাওয়া গেল। শ্রীমন্তের মুখে সকলে ঘটনা শুনে আশ্চর্য্য হয়ে বলাবলি করতে লাগলেন, ইনি তাে বউ নন, স্বয়ং লক্ষ্মী! সেই দিন থেকে নাটাই ব্রতের কথা শ্বশুরের দেশেও ঘরে ঘরে প্রচার হয়ে গেল।

 কএক বছর পর ধনপৎকুমারীর এক সুন্দর ছেলে হলাে। তাঁর শ্বশুর খুব ঘটা করে নাতির অন্নপ্রাশনের উয্যুগ করলেন। কিন্তু শ্বশুরের মনে সুখ নাই। গাঁয়ে খুব জলকষ্ট দেখে তিনি অনেক টাকা খরচ ক’রে এক পুকুর কাটিয়েছিলেন, কিন্তু তাতে কিছুতেই