পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
নাটাই

 সন্ধ্যা হয়ে এলো। ধনপৎকুমারী ভাবলেন, শুনতে পাচ্ছি নূতন পুকুরে জল উঠেছে। আমার খোকার কত ভাগ্যি, তারই ভাতের দিনে এতকাল পর পুকুরে জল উঠলো। একবার পুকুরে গিয়ে গা ধুয়ে আসি। এই ব’লে তিনি পুকুর ঘাটে গেলেন। সে দিন অগ্রহায়ণ মাসের রবিবার। ধনপৎকুমারী পাড়াপড়শী মেয়েদের উলু শুনতে পেয়ে চমকে উঠলেন। যে ব্রতের পুণ্যিতে আমার এত হলো, আমি সেই ব্রত ভুলে গেছি! পুকুরপাড়ে পূজোর ফুল, দুর্ব্বা ও আলো চা’ল ছড়িয়ে পড়ে ছিল। তিনি তাই কুড়িয়ে তাড়াতাড়ি পিটুলির চাপাটি তয়ের করে ব্রত করলেন। অমনি নাটাই ঠাক্‌রুণ নিজ মূর্তিতে প্রকাশ হলেন। তাঁর কোলে ধনপৎকুমারীর জীয়ন্ত ছেলে! দেবী রাগের ভাণ ক’রে কুমারীর গালে ঠোনা মেরে তাঁর কোলে ছেলে দিলেন। আর বল্লেন, তোর ছেলেকে সেই কখন এরা কেটে পুকুরে ফেলেছে, আর এখন সন্ধ্যে হলো, এখনো তুই ছেলের খোঁজ কচ্চিসনে! আমি পুকুরের ভেতর আর কতক্ষণ তোর ছেলেকে কোলে নিয়ে ব’সে থাকবো। এই ব’লে নাটাই ঠাক্‌রুণ আকাশে মিশে গেলেন।

 ধনপৎকুমারী ছেলে কোলে ক’রে এসে ঘরের মেজেয় ভিজে কাপড়ে শুয়ে রইলেন। তাঁর মনে বড় অভিমান হয়েছে। তাঁকে না বোলে কোয়ে এঁরা এমন ভয়ানক ছলনার কাজ ক’রে ফেল্লেন! তাঁর পাশে বসে, ঘরের দো’রে কপাটের শিকল নেড়ে, ছেলেটী হেঁসে হেঁসে খেলা কচ্ছিল। ছেলেকে দেখে সকলে যারপর নাই আশ্চর্য্য হয়ে দৌড়ে এল। শ্বশুর বল্লেন, মা! তুমি মানুষ না দেবতা? বাড়ীর উঠানে লোকে লোকা-