পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গয়লার মেয়ে

ত’রে কাঁদবেন। এমন সময়ে ছেলে উপস্থিত। মা’কে ব্যস্ত সমস্ত দেখে সে বল্লে, মা, তুমি এত উতলা হয়েছ কেন? দিদিদের বাড়ীতে সব ভাল। তাঁরা তোমার সোণা পেয়ে তোমার কত সুখ্যাত করেছেন, আমিও বাজার থেকে দই সন্দেশ মাছ দুধ কিনে দিয়েছি।

 গয়লার মেয়ের কান্না কিছুতেই হলো না। তিনি আবার সইয়ের কাছে ছুটে গেলেন। গিয়ে বল্লেন, সই কাঁদতে না পেরে “সেজন” বুঝি মারা গেল! বামুন ঠাকরুণ মহা বিরক্ত হলেন। খানিক ভেবে চিন্তে বল্লেন, হাঁ, এবার ঠিক হয়েছে। আর তোমার ভাবনা নেই। এক কাজ কর। আস‍্ছে কার মঙ্গলবার। এবারে তুমি আর ব্রত করোনা। গয়লার মেয়ে তাই কল্লেন। পরদিন মঙ্গলবার তিনি ব্রত উপোস বন্ধ ক’রে। সকাল সকাল পঞ্চাশ ব্যঞ্জন ভাত আহার কল্লেন। এবার সত্যি সত্যিই তাঁর দুর্ম্মতি হলো। মা মঙ্গল চণ্ডী বিরূপ হলেন। সেই দণ্ডে তাঁর হাতীশালে হাতী ম’লো, ঘোড়াশালে ঘোড়া ম’লো, লোকজন, ছেলে মেয়ে জামাই যে যেখানে ছিল সব ম’রে গেল। তখন তিনি হাহাকার ক’রে দিবা রাত্তির কাঁদতে লাগলেন। তাঁর কান্নার রোল শুনে কেউ আর তিষ্ঠাতে পারে না। এই ভাবে দু’চার দিন কেটে গেল। কেঁদে কেঁদে হয়রান হয়ে তিনি আবার সইয়ের কাছে গিয়ে বল্লেন, সই “সেজন” আর, কাঁদ‍্তে পারে না। ব্রাহ্মণী বল্লেন, তা আমি কি করবো। তোমার এত দিনের সাধ, প্রাণ ভ’রে কাঁদো। শোকে দুঃখে গয়লার মেয়ের বুক যেন ফেটে যেতে লাগলো। তিনি বামুন ঠাকরুণের পায়ে পড়ে বল্লেন, সই রক্ষে করো, “সেজন”