পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডী

ভাবলেন, সাতটী হ’লে একটী দেবো তা আর এমন বেশী কি।

 সন্ন্যাসী বিদায় হইলেন। রাজা শিকড় নিয়ে রাণীদেহে দিলেন। ছোট রাণীর উপরই রাজার প্রাণের টান একটু বেশী। এজন্য আর ছ’রাণী তাকে না দিয়ে নিজেরাই সব শিকড়ের অসুদ খেয়ে ফেলে। তার পর যখন ছোট রাণী এসে অসুদ চাইলে, তখন তারা বল্লে, সে কি বোন্, তুমি এতক্ষণ কোথায়। ছিলে? তোমাকে না খুঁজেছি এখন জায়গা নেই। যাও, ঐ শিলনোড়া ধুয়ে খাওগে; এখনো ওতে একটু লেগে অবিশ্যি রয়েছে। ছোট রাণী অতি ভাল মানুষ, তিনি তাই কল্লেন।

 তার পর দু’মাস, তিন মাস, চার মাস গুণতে গুণতে নয় মাস চলে গেল। দশম মাসে ছ’রাণীর ছটী ছেলে হলো। কিন্তু কোনটাই সর্ব্বাঙ্গসুন্দর নয়। কা’রও কাণা, কারও খোঁড়া, কা’রও বা কুঁজো এইরূপ ছ’রাণীর ছ’ছেলে হলো। আর ছোট রাণীর? তিনি একটী শঙ্খ প্রসব কল্লেন! রাজা বল্লেন, এদের যা হোক মানুষের চেহারা হয়েছে; ছোট রাণীর এটা কি হলো। রাজা আর ছোট রাণীর কাছে ঘেঁসলেন না। ছোট রাণী মনের দুঃখে, সতীনদের বাক্যিযন্ত্রণা এড়াবার জন্য রাজবাড়ী ভাগ করে তাঁর কোলের শাঁকটী নিয়ে কাছেই এক কুঁড়ে ঘরে বাস কত্তে লাগলেন।

 এইরূপে কিছু দিন গেল। ছোট রাণীর শাঁক ক্রমেই বাড়তে লাগলো। রাত্তিরে ঘুমের ঘোরে তিনি টের পেতেন কোন শিশু যেন তাঁর বুকের দুধ চুষে খাচ্চে। ঘুম ভাঙ্গলে কিছুই দেখতে পেতেন না। আর তাঁর বিছানা শিশুসন্তানের