পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডী

ভালুকের মুখে মারা যাব? সেই পথে চল যে পথে কোন উত্ন নেই। উত্তর শুনে সন্ন্যাসী রাজার কাছে ফিরে এসে বল্লেন, এ ছেলেতে আমার কাজ নাই, আমারটা আমাকে দাও। এই ব’লে, তাহার হাতে শাঁক ছিল, তাতে ফু দিয়ে ‘শঙ্খনাথ বুটেশ্বর’ ব’লে ডাকতেই ছোট রাণীর ছেলে খেলা ফেলে ছুটে এলো। সন্ন্যাসী তাকে নিয়ে চ’লে গেলেন। রাজা ও ছোট রাণীর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। রাজা কাঁদতে লাগলেন। ছোট রাণী দুর্গা নাম জপ কত্তে কত্তে গলায় আঁচল দিয়ে বল‍্তে লাগলেন, মা মঙ্গলচণ্ডি! এ সঙ্কট হ’তে উদ্ধার কর। পাড়ার পাঁচ মেয়ে এসে ছোট রাণীকে বল্লে, তুমি সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডীর ব্রত কর; তবেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবে।

 এদিকে, কিছুদূর গিয়ে সন্ন্যাসী শঙ্খনাথ বুটেশ্বরকে জিজ্ঞেস কল্লেন, তুমি সোজা পথে যাবে, কি বাঁকা পথে যাবে? বাঁকা পথে জঙ্গল ও বাঘ ভালুকের ভয়। শঙ্খনাথ বল্লে, আমি রাজপুত্র, কা’কেও ভয় করি না; আর শিকার করাই রাজধর্ম্ম। তুমি বাঘ ভালুকের রাস্তায় আমাকে নিয়ে চল। সন্ন্যাসী তুষ্ট হ’লেন। আবার অনেক দূর গিয়ে জিজ্ঞেস কল্লেন, এ পথে। চোরের ভয়, ও পথে ডাকা’ত; কোন্ পথে যাবে? শঙ্খনাথ। বল্লে, আমি আগে ডাকা’ত শাসন করবো, ডাকা’তের পথে চল। সন্ন্যাসী তুষ্ট হ’লেন; মনে ভাবলেন, ছেলেটী মা’য়ের পূজোয় যুগ্যি বটে।

 এইরূপে চলিতে চলিতে, তিন চার রাজার রাজ্য পার হ’য়ে তাঁরা এক ভীষণ অরণ্যে প্রবেশ করিলেন। সেখানে এক মন্দিরের ভিতর কালীমূর্ত্তি, আর সন্ন্যাসীর থাকিবার এক খানি ঘর।