পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শঙ্খনাথ
২৯

উভয়ে স্নান করিলেন। স্নানের পর সন্ন্যাসী রাজপুত্রকে বল্লেন, তুমি আমার ঘরের ভিতর খানিক বিশ্রাম কর। ঘরের ভিতর সব দিকে দেখতে পার, কিন্তু সাবধান, উত্তর দিকটা দেখিও না। এই বলিয়া তিনি মন্দিরে পূজার আয়োজনে বসিয়া গেলেন। শঙ্খনাথের মনে কেমন একটা সন্দেহ জন্মালো। সব দিক দেখতে পারবে, তাতে কিছু দোষ নেই, যত মানা হ’লো কি-না ওই উত্তর দিকটায়। এই ভাবিয়া তিনি প্রথমেই উত্তর দিকের দরজা খুলিলেন। খুলিয়া দেখেন একটা রক্তের পুকুরে অসংখ্য কাটামুণ্ড পদ্মের মত ভাসচে। রাজপুত্রকে দেখে তারা খিল‍্খিল্ করে হাসতে লাগলো। শঙ্খনাথ আশ্চর্য্য হ’য়ে বলেন, তোমরা। কে? আর আমাকে দেখে হাঁসছো কেন? কাটা মুণ্ডগুলি বল্লে, আজই আমাদের দলে আর একটী লোক পাব এই ভেবে। আমাদের হাসি এলো। সন্ন্যাসী আমাদের দেবীর কাছে বলি দিয়েছে, তোমারও এই দশা করবে। রাজপুত্র বল্লেন, এখন তবে উপায়? তারা পরামর্শ দিলে, সন্ন্যাসী পূজা শেষ ক’রে তোমায় দেবীর কাছে মাথা হেঁট করে প্রণাম কত্তে বলবে; তুমি কখনও প্রণাম করো না। সাবধান! প্রণাম করেছ, কি মারা গিয়েছ। শঙ্খনাথ মঙ্গলচণ্ডীর নাম স্মরণ কত্তে লাগলেন।

 এদিকে সন্ন্যাসীর আহলাদের আর সীমা নাই; ১০৭ টা বলি শেষ হইয়া গেছে, এইটা হ'লেই তাঁর মানসিক পূর্ণ হয়। তাড়াতাড়ি কোন রকমে পূজো শেষ করে ফেল্লেন; সমস্ত পূজাও হয়ে উঠলো না। মা কাত্যায়ণী বিরূপ হলেন; সেবার তাঁর পূজা আর গ্রহণ কল্লেন না। যাই হোক, সন্ন্যাসী তো রাজপুত্রকে মন্দিরে নিয়ে এলেন। তিনি বল্লেন, শঙ্খনাথ!