পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
বুড়া ঠাকুরাণী

ছিল, তাই তুমি এ পর্য্যন্ত দিতে পাল্লে না। তা মরুক গে, এখন এদিকে ঘরে চাল নাই, ডাল নাই, তোমাকে কি খাওয়াব আর ছেলে দু’টীর মুখেই বা কি দি। অপরে আমার সামনে তোমার নিন্দে করে তা আমি প্রাণ থাকতে সইতে পারবো না; কিন্তু নিজে দুটো কথা না ব’লেও পারি না। কি সুখে আছি’ তা কা’কে বলি। ছেলে দু’টী মানুষ হলে ভাবনা ছিল না। গণেশকে তুমি নিজের যুগ্যি ক’রে তুলেছ, সে সিদ্ধি দিচ্ছে আর তুমি তাই খাচ্ছ। আর ছোটটী কেবল ময়ুর চ’ড়ে বেড়াচ্ছে। স্বামী পুত্র আমার কষ্ট বুঝলে না। একটী মেয়ে থাকতো তবে মনের কষ্ট বুঝতে পারতো। এই ব’লে পার্ব্বতী চোকে আঁচল দিয়ে নীরবে কাঁদতে লাগলেন।

 তা’ শুনে মহাদেব বোলচেন, গৌরি, কৈলাসে কিছু অভাব আছে? চা’দ্দিকে যা দেখচো সবই তো আমার। পার্ব্বতী বোলচেন, যা কিছু অভাব, অন্নবস্ত্রের। তুমি বাঘ ছাল পর, বিষ খাও, যা ইচ্ছে তাই কর; ছেলে দু’টীকে নিয়ে আমি আজই বাপের বাড়ী চলে যাব। এই ব’লে তিনি হিমালয়ে চলে গেলেন।

 কৈলাসে কোন অভাব নাই; কিন্তু এক পার্ব্বতীর অভাবে মহাদেবের চা’দ্দিক শূন্য বোধ হ’তে লাগলো। কিন্তু বিনা নিমন্ত্রণে শ্বশুর বাড়ী যাওয়া অপমান। আর গিরিরাজের অন্তঃপুরে ঢুকে পার্ব্বতীর সঙ্গে দেখা করবার উপায় কি? অনেক ভেবে চিন্তে এক মৎলব ঠাওরালেন। মহাদেবের মনে হলো, পার্ব্বতী শাঁখা পরতে চেয়েছিলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ শাঁখারির বেশ ধারণ করে গিরিরাজের বাড়ী উপস্থিত হলেন।