পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শঙ্কর শাঁখারি
৬৩

 শাঁখারি এসেছে শুনে পার্ব্বতী বড় সুখী হ’লেন। রাণী মেনকা শাঁখারিকে বাড়ীর ভেতর আনালেন। পার্ব্বতী একটু ঘোমটা টেনে, কঙ্কণ খুলে শুধু-হাতের উপর খানিকটা আঁচল জড়িয়ে শাঁখা পরতে বসলেন। শাঁখারির আনন্দের সীমা নাই। শাঁখা পরানো আর ফুরোয় না। কতবার হাত টিপচেন, তেল মাখাচ্চেন, শাঁখা পরাচ্চেন, খুলচেন, মাজা-ঘসা কচ্চেন। পার্ব্বতীকে দেখে মহাদেবের আশ মিটে না।

 নূতন শাঁখা প’রে পার্ব্বতী মাতাকে প্রণাম কল্লেন। শাঁখারি মেনকা রাণীকে বল্লেন, আমি দাম চাইনে; বেলা হয়েছে, যদি অনুমতি হয় তবে এখানেই আজ স্নানাহার করবো। পার্ব্বতী শাঁখা পরবার সময়েই মহাদেবকে চিনেছেন। তিনি পরম যত্নে শাঁখারির স্নানের উয্যুগ করে, নিজে রেঁধে নিজ হাতে পরিবেশন করলেন।

 দেবতার চরিত্র মানুষের বুঝবার সাধ্য কি। সেই দিন রাত্রে মহাদেব নিজ মূর্ত্তিতে পার্ব্বতীর শয়ন ঘরে দেখা দিলেন। পার্ব্বতী বলেন, তোমার হাতের স্পর্শ পেয়েই আমি তোমাকে শাঁখা পরবার সময় চিনতে পেরেছি। তোমার তখন ছদ্মবেশে আসা ভাল হয়নি। মহাদেব বল্লেন, নিমন্ত্রণ না পেলে আমি এখানে আসি কি ক’রে? সেই রাত্রে দ্বাদশ দণ্ডের ভিতর পার্ব্বতীর এক কন্যা প্রসব হলো। পার্বতী চিন্তিত হয়ে বল্লেন, তুমি এখানে এসেছ তা এখন মা-বাপের কাছে না ব’লে উপায় কি? জান তো এ স্বর্গ নয়; মর্ত্তে আছি। মহাদেব বল্লেন, তোমার সে ভয় নাই, আমি এখনি মেয়েটীকে সঙ্গে ক’রে কৈলাসে যাচ্ছি। মহাদেব তাই কল্লেন। কিন্তু কতদুর রাস্তায়