পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই ভগিনী
৬৭

পায়রা ধরে ফেল্লে। এক বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ বাড়ীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি তাই দেখে উর্দ্ধশ্বাসে দৌড়ে এসে বল্লেন, কর কি! কর কি! এ যে ইতু-রা’ল পরমেশ্বর ঠাকুরের পায়রা, এখুনি ছেড়ে দাও। তারপর মেয়েদের দুঃখের কথা শুনে বুড়ো ব্রাহ্মণের বড় দয়া হলো। তিনি বল্লেন, তোমরা ইতু-রা’ল ঠাকুরের ব্রত কর, তবেই তোমাদের সব দুঃখ দূর হবে। সেদিন অগ্রহায়ণ মাসের রবিবার; মেয়ে দু’টী তো উপোস করেই ছিল, তখনি তারা পূজো ক’রে ব্রত নিয়ম পালন কল্লে। ব্রতের পুণ্যিতে এক নিমেষে যেখানে তাদের কুঁড়েঘর ছিল সেখানে প্রকাণ্ড রাজ অট্টালিকা হলো। মরাই ভরা ধান হলো, গোয়াল ভরা গরু হলো, পাল ভরা মোষ হলো। বাড়ীঘর ধন জনে ভরে গেল।

 মেয়ে সেদিন আনন্দে পথের পানে চেয়ে আছে কখন বাপ বাড়ী আসবে। কিন্তু সন্ধ্যে হলো, তবু ব্রাহ্মণ ভিক্ষা ক’রে বাড়ী ফেরেন না; এজন্যে মেয়েরা বড় ব্যস্ত হলো। বড় মেয়েটীর নাম অমুনা, ছোটটী যমুনা। ছোট হলেও যমুনা অমুনার চেয়ে বেশী সেয়ানা। সে বলে, দিদি, বাবা আমাদের বাড়ীঘর এখন চিনতে পারবেন কেন; তিনি হয়তো ভাবছেন কোন রাজা এসে আমাদের তাড়িয়ে দিয়ে এখানে রাজ অট্টালিকা করেছে। চল যাই বাবাকে খুঁজে আনিগে। এই বলে তারা বাইরে গিয়ে দেখলে, ব্রাহ্মণের হাতে ভিক্ষার ঝুলি, তিনি বাড়ীর পাশে হা হুতাশ ক’রে পড়ে আছেন। মেয়েরা তাঁকে ইতু-রা’ল ব্রতের প্রত্যক্ষ ফলের কথা বলাতে তিনি আশ্চর্য্য হয়ে নূতন বাড়ীতে প্রবেশ কল্লেন। অমুনা ও যমুনা ইতু-রা’ল দেবতার,