পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
ইতু-রা’ল

কাছে প্রার্থনা কল্লে, ঠাকুর, আমাদের তো সবই হলো, কিন্তু ঘরে মা নেই; আমাদের মনােবাঞ্ছা পূর্ণ করাে।

 সেই দেশের রাজার এক পরম রূপবতী কন্যা ছিল। রাজকন্যা বড় হয়েছেন তবু বিয়ে হয় নাই। আইবুড় সােমত্ত মেয়ে দেখে রাণীর মুখে ভাত রােচে না। রাজা অন্তঃপুরে আসতেন না, আর মেয়ে যে এত বড় হয়েছে তাও তাঁর জ্ঞান নাই। রাজা একদিন হঠাৎ অন্দরে এসে খেতে বসেছেন; রাণী মেয়েকে দিয়ে পরিবেশন করালেন। রাজা কন্যাকে চিনতে পারেননি। রহস্য করে বল্লেন, রাণি! তােমার ছােট বােনটীর চেহারা তাে বেশ, তােমার চেয়ে সুন্দর। একে কবে আনলে? আহা, দুটা দিন এখানে থাক্। এবার আমাকে অন্তঃপুরে কয়েদ রাখবার বেশ উপায় ঠাউরিয়েছ। তােমার বুদ্ধি বলিহারি যাই, আর আমি অন্তঃপুর ছাড়বো না। রাণী খুব চটে বল্লেন, মরণ আর কি! চোকের মাথা খেয়েছ? আমিও তােমার বুদ্ধিকে বলিহারি যাই। রাজা নিজের ভ্রম বুঝতে পেরে লজ্জায় মরে গেলেন। তাঁর খাওয়া হলাে না; তিনি প্রতিজ্ঞা কল্লেন, কাল ভােরে উঠে যার মুখ দেখবাে, জাত বিচার না ক’রে তাকেই কন্যা সম্প্রদান করবো। কন্যা সম্প্রদান না ক’রে আর এক বিন্দু জল গ্রহণ করবো না।

 এদিকে সেই ব্রাহ্মণ এখন বড়লােক হলেও তাঁর বহুদিনের ভিক্ষাবৃত্তির অভ্যাসটি যায় নাই। ইতু-রা’ল ঠাকুর শেষ রাত্রে তাঁকে স্বপ্নে আদেশ দিলেন, তুমি খুব ভােরে উঠে রাজবাড়ী যাবে, রাজা দাতাকর্ণ হয়ে আজ দানের মতন দান করবেন। তুমি পশ্চিম মুখো হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। ভুলাে না, সাবধান!