পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
ইতু-রা’ল

কত্তে আসিনি। এই অবােধ শিশু “দিদি দিদি” ব’লে অধীর হয়। তােমার দস্যি মেয়ে দুটার কোন কাজ কর্ম্ম নেই, ফি রবিবার পিটুলির পুতুল গড়ে খেলা করে, শিশুকে কিছুতেই খেলাতে দেবে না, তাকে মেরেছে। আর আমায় যা-না-বলবার তাই বলে গালাগাল দিয়েছে; ঘেন্নায় লজ্জায় আমি পালিয়ে এসেছি। তুমি কন্যা নিয়ে সুখে ঘরকন্না কর, আমাকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দাও; সেখানে আমার চা’ট্টি অন্নের অভাব হবে না। হায়, আমি কেন এমন ছােট লােকের ঘর কত্তে এলুম। এই ব’লে ব্রাহ্মণী মুখে আঁচল দিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।

 বেচারী বামুনের মুখে কথা নাই। তিনি ভাবলেন ব্যাপার গুরুতর; অমুনা ও যমুনা নিশ্চয়ই বিশেষ অপরাধ করেছে। ব্রাহ্মণকে নরম দেখে ব্রাহ্মণী আবার কান্নার সুরে বলেন, মেয়ে দুটোকে কালই বনবাস দাও তবেই আমি তােমার ঘরে যাব নইলে আমি এখুনি বিষ খেয়ে মরবাে। ব্রাহ্মণ বুল্লেন, বনবাস তাে বনবাস, যদি তুমি বল আমি ওদের এখুনি কেটে ফেলি। তুমি মনে ক’রে নাও আমি ওদের বনবাস দিয়েছি, তুমি ঘরে চল। এই ব’লে ব্রাহ্মণ ব্রাহ্মণীর হাত ধরে বাড়ী ফিরলেন।

 পরদিন ব্রাহ্মণ কন্যাগণকে ডেকে বল্লেন, চল, আমার সঙ্গে তােমরা তােমাদের মাসীর বাড়ী যাবে। তারা আশ্চর্য হয়ে বল্লে, বাবা, বল কি, আমাদের তাে মাসী নেই! “হ্যাঁ আছে বৈ কি, তােমরা ছেলে মানুষ, সব জান না” এই বলে সারাদিন পথ হেঁটে, বামুন ঠাকুর মেয়েদের সঙ্গে ক’রে সন্ধ্যার কিছু আগে এক ঘাের অরণ্যে প্রবেশ করলেন। ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে