পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই ভগিনী
৭১

মেয়েরা বাপের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো। বামুনের দুর্ম্মতি হয়েছে; তিনি কন্যাদের শিয়রে দুখানি ইট রেখে আস্তে আস্তে সরে পরলেন।

 দুপুর রাত। মেয়ে দু’টীর ঘুম ভাঙ্গলো। তারা দেখলে বাপ নেই, চাদ্দিকে ঘোর আঁধার ও বাঘ ভালুকের রব। এখন উপায়! যমুনা সেয়ানা; সে বলে, দিদি বুঝতে পাচ্ছ না! বাবা আমাদের মায়ের চক্রান্তে বনবাস দিয়েছেন। তখন দু’বোন করযোড়ে ইতু-রা’ল ঠাকুরকে ভক্তিভরে ডাকতে লাগলো। তাঁর কৃপায় কোন ভয় রইল না; দুই ভগিনী বনের ভিতর এক কুটীরে বাস কত্তে লাগলো। ইতু-রা’ল ঠাকুর তাদের সঙ্গে রইলেন।

 একদিন এক দূর দেশের রাজপুত্র আর মন্ত্রীর পুত্র বনে মৃগয়া কত্তে এসেছেন। তাঁরা পিপাসায় কাতর হয়ে জলের অন্বেষণে অরণ্যের ভিতর লোকজন পাঠালেন। তারা কুটীরে এসে ব্রাহ্মণ কন্যাদের কাছ থেকে জল নিয়ে গেল। ইতু-রা’ল ঠাকুরের চক্র, তাই জলপানের সময় রাজপুত্র ও মন্ত্রী-পুত্র জলের ভিতর খুব লম্বা দু’গাছি মাথার চুল দেখতে পেলেন। তাঁরা আশ্চর্য্য হয়ে বল্লেন, আহা চুল তো নয়, যেন শ্যামাঠাক্‌রুণের কেশ! এই ঘোর অরণ্যে সুকেশী রূপবতী রমণী কোথায়? অনুসন্ধান ক’রে জানতে পারলেন কুটীরের ভিতর দুইটী পরমা সুন্দরী কন্যা আছে। তাঁরা কুটীরে গিয়ে তাঁদের দেখে মোহিত হয়ে গেলেন। ইতু-রা’ল ঠাকুর তাঁদের মন জেনে ছদ্মবেশে প্রকাশ হয়ে, রাজপুত্রের সঙ্গে অমুনার এবং মন্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে যমুনার বিয়ে দিলেন। তাঁরা বউ নিয়ে খুব ঘটা ক’রে বাড়ী