পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
ইতু-রা’ল

যাত্রা করলেন। তখন যমুনা অমুনাকে বল্লন, দিদি তুমি চল্লে তোমার বাড়ী, আমি চল্লুম আমার বাড়ী; কিন্তু সাবধান। ইতু-রা’ল ঠাকুরের ব্রত যেন ভুলো না।

 কিছু দিন পর রাজপুত্র রাজা হলেন, মন্ত্রীর পুত্র মন্ত্রী হলেন। তাদের দু’জনেরই ছেলে হলো। পরম সুখে দিন যেতে লাগলো। রাণীর উপর রাজার অগাধ ভালবাসা। তিনি যা বলেন রাজা তাই করেন। রোজ নূতন হীরের ফুল, গজ-মুক্তোর হার রাণীকে পরিয়ে রাজার আশ মিটতো না। একদিন রাজার চোকে রাণীর পায়ের আলতার রং একটু যেন ময়লা বোধ হলো। আর অমনি, রাণীর ঘর ভাল ক’রে ঝাঁট দেয়নি কেন এই অপরাধে, ঝাড়ুদার ও তার সাত ছেলের গর্দ্দানা নেবার হুকুম দিয়ে ফেল্লেন।

 কিন্তু রাজার এত যে ভালবাসা, তা একদিন বালির বাঁধের মত ধসে গেল। রাণী অমুনা পিটুলির পুলি গড়ে ইতু-রা’ল ব্রত কোরতেন। রাজা প্রায়ই বোলতেন, ছি, তুমি হলে রাজরাণী, ফুলের তোড়া হাতে নিয়ে পরীটির মত সারাদিন বসে থাকবে। আর যদি ব্রত করতেই হয় তবে রাজা রাজড়ার মত ব্রত করবে; হাতী দান করবে, ঘোড়া দান করবে। তা না ক’রে, এ তুচ্ছ পিটুলির ব্রত তোমায় কে শেখালে? আমার কথাটা রাখ, এ ব্রত আর করো না। রাণী আর কিছুতেই মানা শুনলেন না। একদিন রাজা ব্রতের জিনিষ পায় ঠেলে ফেলে দিয়ে রেগে আগুন হয়ে বল্লেন, জঙ্গলী মেয়ে! জঙ্গলই তোর যোগ্য স্থান। এই ব’লে অমুনাকে বাড়ী হ’তে তাড়িয়ে দিলেন। ইতু-রা’ল ঠাকুর বিরূপ হলেন।