পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই ভগিনী
৭৫

হইয়া গেল। রাজা রাণীকে পেয়ে প্রথমে খুব সন্তুষ্ট হলেন বটে, কিন্তু তাঁকে কিছুতেই ব্রত করতে দিলেন না। অনেক দিন ব্রত না করাতে রাণীও ব্রত ভুলিয়া গেলেন। সে দিন থেকে মা লক্ষ্মীও রাজবাড়ী ত্যাগ করলেন। রাজার হাতীশালে হাতী মলো, ঘােড়াশালে ঘােড় মলো; দারুণ রােদে শস্য পুড়ে গিয়ে দেশে দুর্ভিক্ষ হলো। রাজা ভাবলেন কি কুক্ষণে আমি এই বনবাসিনীকে ঘরে এনেছিলেম। আমার সোনার সংসার ছিল, সবই ছারখার হয়ে গেল। একবার তাড়িয়ে দিয়েছিলেম, ভালই হয়েছিল। আবার অলক্ষ্মীকে ডেকে নিয়ে এসে কি আহাম্মুকি করেছি! রাণী ও তার পেটের ছেলেটা বেঁচে থাকতে আমার কিছুতেই ভাল হবে না।

 রাজা মন্ত্রীকে ডাকিয়ে বল্লেন, দেখ ভাই তুমিও বনবাসিনী কন্যে বিয়ে করেছ আমিও তাই করেছি। তবে তােমার এত সুখ সম্পদ কেন, আমারই বা সব উল্টো কেন? রাণী বেঁচে থাকতে আমার অদৃষ্টে কিছুতেই শান্তি নাই। রাণীর ও তার ছেলের সুন্দর মুখ ও রূপ দেখলে আমি সব ভুলে যাই। আমি নিজ হাতে হত্যা করতে পারবাে না; জল্লাদের হাতে দিয়ে অপমান করবারও ইচ্ছে নাই। আমি আদেশ দিচ্ছি, তুমি এক কাজ কর। রাণীকে ও তার ছেলেকে গােপনে নিয়ে যাও, গােপনে হত্যাসাধন ক’রে আমাকে তাদের রক্ত দর্শন করাও। তাদের রক্ত দেখলেই আমার শান্তিলাভ হবে। যাও, আর দ্বিরুক্তি করিও না।

 মন্ত্রী বাড়ী গিয়ে যমুনাকে বল্লেন, এখন উপায়? যমুনা খানিক চুপ ক’রে ভাবতে লাগলেন। পরে বল্লেন, রাজার