পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
ইতু-রা’ল

পুরুষের সঙ্গে একত্র আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে শুয়ে রয়েছে। তবে রে দ্বিচারিণি, জঙ্গলী মেয়ে! রাজা রাণীর কেবল রক্ত দেখেছেন, আমি তাের রক্তে স্নান করবো। এই ব’লে রাগে অন্ধ হ’য়ে যেই একখানি দা হাতে তুলে নিয়েছেন অমনি দেখতে পেলেন, যাকে পুরুষ ভেবেছেন তার পায়ে মল ও হাতে শাঁখা।

 মন্ত্রীর যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো। তিনি যমুনাকে জাগিয়ে সব কথা শুনলেন। তিনি ভাবলেন, স্ত্রী আমার পরম সতী; এঁরি পুণ্যবলে আজ দু দু’টী স্ত্রীবধ হতে রক্ষা পেলুম। রাণীকে বিনা বিচারে হত্যা করিয়েছি মনে ক’রে আমার ঘুম হতাে না; এঁরি পুণ্যবলে সে পাপ আমার হয়নি। ইতু-রা’ল ঠাকুরকে ধন্যবাদ! এই ব’লে তিনি নিজে উয্যুগী হয়ে রাণীকে ও স্ত্রীকে খুব সমারােহে ব্রত করালেন। রাণীর কোন দোষ নাই, রাজারই দুর্মতি হয়েছে তা তিনি স্পষ্ট বুঝতে পারলেন। তিনি সকলকে বলতে লাগলেন, আমি আর রাজার ভয় করি না, তিনি পাগল হয়েছেন।

 রাণী ব্রত সমাপন ক’রে করযােড়ে বর মাগলেন, ভগবান ইতু-রা’ল ঠাকুর! স্বামী আমার দেবতা, তাঁকে সুমতি দাও, আমার আর কিছু আকাঙ্ক্ষা নাই। তাঁর দোষ ক্ষমা কর।

 রাজার মতির স্থিরতা নাই। রাণীর অভাবে তিনি আবার অধীর হয়ে উঠলেন। তিনি মন্ত্রীকে এখন রোজ বােল্‌চেন, হায় আমি কি কাজ করেছি। রাণী আমার গৃহের লক্ষ্মী ছিলেন। তিনি যাবার পর আর ঘরের শ্রী ফিরিল না। রাণী তাঁর ইষ্ট দেবতার ব্রত কোরতেন, আমি না বুঝে তাঁর অপমান করেছি। এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত নাই। ভাই, বলে দাও কোন্ স্থানে