পাতা:মেয়েলি ব্রত ও কথা - পরমেশপ্রসন্ন রায় (১৯০৮).pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই ভগিনী
৮১

 রাজা রাণীর আনন্দের সীমা নাই। এত আহ্লাদের ভিতরেও তাঁদের দুজনের চো’কে জল। রাজা স্ত্রীপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে মহা সমারোহে রাজবাড়ী চল্লেন। রাজ বাড়ীতে মহা ধুমধাম। সাত দিন সাত রাত চারদিকে কেবল “খাও দাও” রব। রবিবার দিন আমোদ আহ্লাদে রাজা ও রাণী আহার করে উঠেছেন, এমন সময় ইতু-রা’ল ব্রতের কথা মনে পড়ে গেল! এখন উপায়? এই আনন্দের কোলাহলের ভিতর রাজ বাড়ীতে আর কে উপবাসী আছে, যে তাঁদের হয়ে আজ ব্রত করবে! তখন খোঁজ খবর করে জানা গেল, সেই ঝাড়ুদারের বিধবা স্ত্রী, পতিপুত্রশোকে জর্জ্জরিত হয়ে এ পর্য্যন্ত জল গ্রহণ করে নাই। রাজা রাগের মাথায় বিনা দোষে, বিনা বিচারে তার স্বামীর ও সাত পুত্রের প্রাণ দণ্ড করেছিলেন। রাজার মনে বড় অনুতাপ হলো। এই বিধবা পুত্র-শোক-কাতরা দুঃখী রমণীর চো’কের জল থাকতে কিছুতেই আমার মঙ্গল হবে না। রাজা তাকে সমাদরে ডেকে প্রতিনিধি করে ইতু-রা’ল ব্রত করালেন। তখনি তার সোয়ামী ও সাত ছেলে বেঁচে উঠলো। রাজা প্রজা সকলেরই আনন্দের সীমা রহিল না। “জয়, ইতু-রা’ল ঠাকুরের জয়’ রবে চারি দিক ছেয়ে গেল।

 রাণী অমুনা ও মন্ত্রী-মহিষী যমুনা মাবাপকে দেখবার জন্য ব্যাকুল হলেন। তাঁদের পূর্ব্ব আচরণ মেয়েরা এখন ভুলে গেছেন। এক রাজার জামাই ও আর এক রাজার শ্বশুর, সেই ব্রাহ্মণ নিমন্ত্রণ পেয়ে ব্রাহ্মণী ও পুত্রকে সঙ্গে করে অনেক দিন পর মেয়েদের দেখতে এলেন। যমুনা বয়ঃপ্রাপ্ত ভাইকে কোলে নেবার উদ্যোগ অভিনয় করে মা’কে হেঁসে বল্লেন, মা দুষ্ট