কি কারণে সন্ধ্যাবেলা আইলা মোর বাড়ী।
কোন কাজের হেতু আইলা কহ সত্য করি॥”
এত বলি গোয়ালিনী দৌড়ী তাড়াতাড়ি।
বৈসনের[১] লাগি দিল নতুন একখান পিড়ি॥
কেওয়া সুপারী খয়ার[২] সাচী পান দিয়া।
গোয়ালিনী কারকুনেরে দিল পান বানাইয়া॥
গুরগুরিতে ভরিয়। তামুক দিল কারকুনেরে।
কারকুন কহিল পরে গোয়ালিনীর হাত ধরে॥
“শুন শুন শুন ওগো চিকন গোয়ালিনী।
তোমার ত যৌবন ছিল জোয়ারের পানি॥
তুমিত রসিক নারী ভাল কইরা জান।
যৌবনে কেমন করে মন উচাটন॥
শুন তোমার কাছে কই মোর মনের কথা।
কমলারে দেখ্যা বড় পাই মনে ব্যথা॥
কেমনে পাইব তারে কও গোয়ালিনী।
কমলারে কৈরে দান রাখ মোর প্রাণী॥
আনইলে[৩] আমার প্রাণ রাখা হইল ভার।
মরিলেও না ছাড়িব তোমার কাছার[৪]॥”
এতেক শুনিয়া তবে কয় গোয়ালিনী।
“এই কথা যেন আমি আর নাই যে শুনি॥
চাকলাদার শুনলে তোমার লইবে গর্দ্দান[৫]।
অকালে বিপাকে যেন হারাইবা প্রাণ॥”
এত শুনি পড়ে কারকুন গোয়ালিনীর পাও।
“সাত পাচ বলি মোর নাহি যে ভারাও[৬]॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৮
মৈমনসিংহ-গীতিকা