পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩২
মৈমনসিংহ-গীতিকা

দ্বিজ ঈশান ভনে বিপরীত কাণ্ড।
আজি হতে শূন্য হইল এই দধির ভাণ্ড॥”

তখন গোয়ালিনী কয় মনেতে হাসিয়া।
“এমন বয়সে কন্যা তোমার না হৈল বিয়া॥
বয়সের দোষে যখন পুষ্প যাবে চলি।
তখন ডাকিলে কন্যা না আসিবে অলি॥
এমন যৌবন কেন অনর্থে হারাও।
কেমন কঠিন জানি তোমার বাপ-মাও॥
সময় থাকিতে কন্যা বিলাও ফুলের মধু।
সাধ্যা[] দিলে কিছু পরে না আসিবে বঁধু[]
তোমার যৌবন দেখি চিত্তে অনুরাগী।
আবার মরিয়া জন্মি যৌবনের লাগি॥
এমন যৌবন কেন যায় অকারণ।
বিয়া না করিলে কন্যা না চিন মদন॥
গাথিয়া ফুলের হার দিবা কার গলে।
তোমার গাথা মালা দেখ্যা দুঃখে অঙ্গ জ্বলে॥
এমন সুন্দর মালা যাইব শুকাইয়া।
তোমার দুঃখু দেইখ্যা কন্যা আমার কান্দে হিয়া॥
নিজের মালা নিজে পইরা কেবা সুখী হয়।
এই মতে কাটাইতে কাল উচিত নাহি হয়॥
তোমার লাইগ্যা কত ভমর পাগল হইয়া ফিরে।
অন্ধকারে বস্যা কন্যা থাকহ অন্দরে॥
বিয়া যদি হইত তোমার বনদুর্গার বরে।
ভাল দৈ আন্যা দিতাম তোমার নাগরে॥”

এই কথা শুনিয়া কন্যা মুচকি হাসিয়া।
গোয়ালিনীর কাছে কয় অধষ্ণ[] হইয়া॥
“শুন শুন গোয়ালিনী বচন আমার।
আমার বিয়ার কথা অতি চমৎকার॥

  1. সাধ্যা=সাধিয়া।
  2. বঁধু=বন্ধু, নাগর।
  3. অধষ্ণ=অধোমুখ (?)