পত্র পড়ি চক্ষের জলে ভাসিছে কমলা।
“এত দুঃখ ভাগ্যে মোর বিধি লিখেছিলা॥
বিদেশে হইল বন্দী বাপ আর ভাই।
কত দুঃখ পাইয়া আমি মামার বাড়ী যাই॥
বাপের বাড়ীর যত ধন লুটিল ডাকাতে।
এতেক অপমান পাইলাম কারকুনের হাতে॥
বিপাকে পড়িয়া আইলাম মামার বাড়ী।
কিছুকালে পুর্ব্বদুঃখ গেছিলাম পাশরি॥”
পড়িতে পড়িতে কন্যার চক্ষে বহে পানি।
সম্মুখে যে আইল তার কি কালরজনী॥
“চন্দ্রসূর্য্য ডুইব্যা গেছে আন্ধাইর সংসার।
এক দণ্ড এই ঘরে না থাকিব আর॥
বাপে জন্ম দিয়া থাকে যদি হই সতী।
বিপদে করিবে রক্ষা দুর্গা ভগবতী॥
জলে ডুবি বিষ খাই গলে দেই কাতি।
মামার বাড়ী না থাকিব দণ্ড দিবা রাতি॥”
যা করেন বনদুর্গা মনে মনে আছে।
একবার না গেল কন্যা আপন মায়ের কাছে॥
একবার না গেল কন্যা মামীর সদনে।
একবার না চাইল কন্যা মায়ের মুখপানে॥
একবার না ভাবিল কন্যা জাতিকুলমান।
একবার না ভাবিল কন্যা পথের আন্ধান[১]॥
একবার না ভাবিল কন্যা কি হইবে আমার গতি।
একলা পন্থেতে পড়ি কি হবে দুৰ্গতি॥
একবার না ভাবিল কন্যা আশ্রয় কেবা দিবে।
সন্ধ্যাবেল। তারা ফুটে সূর্য্য ডুবে ডুবে॥
এমন সময় কন্যা কোন কাম করে।
বনদুর্গা স্মরি কন্যা পথে মেলা করে॥
- ↑ আন্ধান=সন্ধান (?)।