এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
মৈমনসিংহ-গীতিকা
আঁখিজলে ভরে কন্যা নাহি দেখে পথ।
বারে বারে চক্ষু মুছে নাহি চলে রথ॥
( ১১ )
মহিষালের গৃহে
হাটিয়া অভ্যাস নাই যৌবনের ভারে।
ক্ষণে উঠে ক্ষণে বসে চলিতে না পারে॥
হাওরে পড়িল তথা নাহি লোকজন।
বিধাতা শুনিলা বুঝি তাহার কান্দন॥
এক বৃদ্ধ মইষাল[১] যে মইষ লইয়া যায়।
পন্থে পড়ি কমলা তাহার লাগ পায়॥
“অগতির গতি তুমি তুমি ধর্ম্মের বাপ।
সংসার ছাইড়া আইছি পাইয়া বড় তাপ॥
এত দুঃখ নাহি জানি আছিল কপালে।
আজি রাতি কর যাগা[২] তোমার গোয়ালে॥
ভাতপানি নাহি চাই তোমার সদনে।
আঞ্চল বিছাইয়া থাকবাম গোয়াইলের কুণে[৩]॥”
অপরূপ রূপ দেখি মইমাল ভাবিল।
লক্ষ্মী বুঝি ছলিবারে আমারে আইল॥
“ভাল পূজা দিবাম মাগো আইস আমার ঘরে।
অচলা হইয়া থাকবা আমার না ঘরে॥
ধনে পুত্রে বর দেও বারুক সম্পদ।
তোমার কৃপায় ঘুচুক বালাই আপদ॥
বিয়ানী[৪] মইষে দেউক তিনগুণ দুধ।
আমার ঘরে থাক মাগো রাইখ্যা অনুরোধ॥”