কাডা[১] ভাঙ্গি ঠাডা[২] পড়ে কারকুনের শিরে।
কহিতে না পারে কারকুন ধর্ম্ম রাজার ডরে॥
পত্র পড়িয়া রাজা সভারে জানায়।
চিকন গোয়ালিনী তবে ঠেকিল যে দায়॥
রাজা বলে দন্ত তোর ভাঙ্গিল কি মতে।
গোয়ালিনী কয় কথা আকারে ইঙ্গিতে॥
পরক্ষণে বাহানা[৩] ধরে চিকন গোয়ালিনী।
“সান্নিকে পড়িল দন্ত আর নাহি জানি॥”
রোষিয়া কোটালে রাজা হুকুম করিল।
গর্জিয়া কোটাল আসি চুলেতে ধরিল॥
উপায় না দেখি তবে ভাবে গোয়ালিনী।
কারকুনেরে গালি পারে “আমি নাহি জানি॥
পত্রে কিবা লিখা ছিল নাহি জানি তার।
দোষ ক্ষমা দিয়া মোরে করহ নিস্তার॥”
আন্দি-সান্দি সাক্ষী ছিল তারা দুইটি ভাই।
মায়ে ঝিয়ে পাল্কীতে করি মামার বাড়ী যাই॥
মাম। সাক্ষী মামী সাক্ষী কহে সকল কথা।
মৈষাল বন্ধু সাক্ষী দিল সত্যিকার কথা॥
রাজার কুমার সাক্ষী দিল “শিকারেতে যাই।
গোয়ালায় যাইয়া আমি কমলার দেখা পাই॥”
সকল সাক্ষী শেষ হইল বিচার হৈল দড়।
হুকুম শুনিয়া কারকুন হইল ফাফর॥
হাতে গলে বান্ধ্যা লয়া দারুণ কোটালে।
রাজা কয় কারকুনেরে নাহি দিবাম শূলে॥
করিয়া মায়ের পূজা রাত্রি নিশা কালি।
কারকুনে দিলেন রাজা পূজার নরবলি॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কমলা
১৬৫