সিনানের গীত হইল যত জানা ছিল।
ছান করি বরকন্যা ধরেতে আসিল॥
বাদ্যভাণ্ড বাজে কত তার সীমা নাই।
সাজন করে বরকন্যায় সখীগণ সবাই॥
রতন মুকুট দিল বরের যে শিরে।
আরশি হস্তেতে তুলি দিল যত্ন করে॥
নানান জাতি কাপড়েতে হইল সাজন।
রূপেতে জিনিল যেমন রতির মদন॥
গলেতে ফুলের মালা সুগন্ধি চন্দনে।
সদরে বসিল যত ভাইস্তা[১] ভাগিনা সনে॥
কন্যারে বেড়িয়া আর যত সখীগণ।
মনের মতন করে অঙ্গের সাজন॥
আচুড়িয়া চিকন কেশ মাথায় বান্দে খোপা।
কাটা চিরুনি দিল আর দিল চুপা[২]॥
তার পরে পড়াইল সাড়ী নামে আসমান তারা।
ভূমিতে থইলে যেমন ভূয়ে আসমান পরা॥
হস্তেতে লইলে সাড়ী ঝলমল করে।
শুন্যেতে থইলে সাড়ী শূন্যে উড়া করে॥
কানেতে পড়াইল দুল চম্পক ঝুমুকা।
নাকেতে সোণার বেসর আর বলাকা[৩]॥
গলাতে পড়াইল এক হীরার হাসুলি।
পায়েতে পড়াইল খারু গুজরী আর পাচুলী[৪]॥
হস্তেতে সোণার বাজু সোণার বাতেনা।
মস্তকেতে সিথিপাটী সুবর্ণের দানা॥
এই মতে সখীগণে করিলে সাজন।
বিধিমত কলাতলে হইল বরণ॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
মৈমনসিংহ-গীতিকা