বাপে দিছিল[১] বনবাসে কর্ম্মদোষ পাইয়া।
মরা পতির সঙ্গে সেই কন্যার হইব বিয়া॥
(হায়রে হায়)
“কান্দিতে কান্দিতে কন্যা শিলা যায় গলে।
মরা স্বামী ধোয়ায় কন্যা আক্ষির[২] জলে॥
সাত দিন সাত রাইত শিওরে বসিয়া।
অঙ্গের শাল তুলে কন্যা বাছিয়া বাছিয়া॥
না খাইয়া না শুইয়া কন্যার সাত দিন গেল।
চক্ষের শাল রাইখ। কন্যা মন্দিরের বাহির হইল॥
“ঔষধ রাখিয়া কন্যা ছান কর্ত যায়।
নগরিয়া লোক এক দাসী বেচ্তে[৩] চায়॥
হাতের কঙ্কণ দিয়া কন্যা লইল দাসী।
সেই দাসী রাণী হইল কন্যা বনবাসী॥”
একে একে কইল পক্ষী যত ইতিকথা।
কাঙ্কণদাসী তারে দিছিল যত ব্যথা॥
সূইচ রাজার বন্ধুর কথা সকল কহিল।
কি কারণে সূইচ রাজার মতিভ্রম হইল॥
কি কারণে কন্যারে সে দিল বনবাসে।
দুঃখের কথা কইতে পক্ষী চক্ষের জলে ভাসে॥
“পাপিষ্ঠি রাজার বন্ধু একাকিনী পাইয়া।
বলে ধরি কন্যারে কর্তে চাইল বিয়া॥
সতী কন্যার কান্দনে সমুদ্রে দিল চড়া।”
এই কথা কহিয়া পক্ষী শূন্যে দিল উড়া॥
উড়িতে উড়িতে পক্ষী সভার আগে কয়।
“আজি হইতে কন্যার বার বছর গত হয়॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪০৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৬
মৈমনসিংহ গীতিকা