ধীরে ধীরে চল্যা কইন্যা নদীর ঘাটে আসি।
আইস্যা দেখে নদ্যার ঠাকুর বাজায় প্রেমের বাশী॥
কোলাকোলি গলাগলি করে দুইজন।
নদ্যার ঠাকুর কহে কথা শুন দিয়া মন॥
“মা ছাড়বাম[১] বাপ ছাড়বাম ছাড়বাম ঘর বাড়ী।
তোমারে লইয়া কইন্যা অইয়াম[২] দেশান্তরি॥”
বাইদ্যার ছেড়ী[৩] কান্দে ধইর্যা নদ্যার ঠাকুরের গলা।
“আমি নারী পাগলিনী বন্ধুরে তুমি গলার মালা॥
তিলেক মাত্র না দেখিলে হইরে পাগলিনী।
পিঞ্জরায় বাইন্ধ্যা রাখছে পাগলা পঙ্খিনী[৪]॥
ফুল যদি হইতারে বন্ধু ফুল হইতে তুমি।
কেশেতে ছাপাই[৫] রাখতাম ঝাইড়িয়া[৬] বানতাম[৭] বেনী॥
আমি মরি জলে ডুব্যারে বন্ধু আমার মাথা খাও।
ছাড়ান দিয়া আমার আশা ঘরে চল্যা যাও॥”
দুইয়ে জনে এতেক করে হুমরা তাহা দেখে।
চল্যা গিয়া কতক দূর পাছে পাছে থাকে॥
রাত্রি ভোরে নদ্যার ঠাকুর ফিরে নিজের বাড়ী।
সকালবেলা চলে কইন্যা লইয়া ঘাঘুরী[৮]॥১—২৮
(৯)
শেষ বিদায়—মহুয়ার উক্তি
“শুন শুন নদ্যার ঠাকুর বলি যে তোমারে।
এই না গেরাম ছাড়্যা যাইবাম আজি নিশাকালে।