সাম্নে পাহাড়ীয়া নদী সাঁতার দিয়া যায়।
বনের কোহিল পক্ষী ডালে বইসা গায়॥
“এইখানে বাঁধ কন্যা নিজের বাসা ঘর।
এইখানে থাকিয়া মোরা কাটাইব দিন॥
সাম্নে সুন্দর নদী ঢেউয়ে খেলায় পানি।
এইখানে বঞ্চিব মোরা দিবস রজনী॥
চৌদিকেতে রাঙ্গা ফুল ডালে পাকা ফল।
এইখানে আছয়ে কন্যা মিঠা ঝরনীর জল।”
নদ্যার ঠাকুর খাইতে বইছে গলায় লাগল কাটা।
বাদ্যার ছেরি[১] মান্যা থুইছে কালা ধলা পাঠা[২]॥
নদ্যার চান্দের জ্বর উঠ্ছে মাথায় বেদনা তাত[৩]।
বাদ্যার ছেরি কাছে বস্যা শিরে বোলায়[৪] হাত।
হাটে যায় রে নদ্যার চান কোনাকুনি[৫] পথ।
বাদ্যার ছেরি ডাক্যা বলে “কিন্যা আইন নথ”[৬]॥
বনের ফল তুইল্যা আনে দুইজনে খায়।
মালাম[৭] পাথরে দুইয়ে শুয়ে নিদ্রা যায়॥
রাত্রিতে থাকয়ে ঠাকুর কন্যা লইয়া বুকে।
দিনেতে উঠিয়া দোহে ভরমে নানান সুখে॥
হস্ত ধরি সুন্দর কন্যা ফিরে বনে বন।
পাড়িয়া আনে বনের ফল করিতে ভইক্ষণ[৮]॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
মৈমনসিংহ-গীতিকা