জিজ্ঞাসা করিলে কেন মুছ চক্ষের পানি!
দরদ লাগিছে তোমার কাতরা হইছে প্রাণী॥
অৰ্দ্ধেক শুনাইলে কথা সেদিন বিয়ানে[১]।
ছুটু[২] কালে হুমরা বাইদ্যা চুরি কইরা আনে॥
ওই শুন বাজে বাশী দূরে শুনা যায়।
সন্ধ্যা গুঞ্জরীয়া গেল চল বাসে যাই॥”
“কাইলী[৩] যদি বাচিরে বন্ধু কইবাম সেই কথা।
আজি কেন উঠ্লরে বন্ধু দারুণ মাথার ব্যথা॥”
বায়েতে হেলিয়া যেমন লতা পড়ে ঢলি।
নদ্যার চান্দের কান্ধে কন্যা পইরা[৪] গেল এলি[৫]॥
“কোন সাপেরে জানি কন্যা করিল দংশন।
আজি কেন কন্যা তোমার এমন হইল মন॥”
শুকনা পাতার বাসর[৬] ভাঙ্গে মড়মড়ি।
তাহার মধ্যে বসে কন্যা মহুয়া সুন্দরী॥
আতঙ্কে কন্যার গায়ে কাল্যাজ্বর[৭] আসে
চলিয়া পড়িল কন্যা দারুণ মাথার বিষে॥
“একটুখানি শুয় কন্যা লইয়া আসি জল
অবশ হইল কন্যা অঙ্গে নাই সে বল॥
কান্দিয়া মহুয়া কয় “এই শেষ দিন।
সাপে নাহি খাইছে মোরে গেছে সুখের দিন॥
দূর বনে বাজন বাশী শুন্যাছ যে কানে।
আসিছে বাদ্যার দল বধিতে পরাণে॥
আমারও পালং সই বাশী বাজাইল।
সামাল[৮] করিতে পরাণ ইসারায কহিল॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
মৈমনসিংহ-গীতিকা