( ২৮ )
হুমরার অনুতাপ; পালঙ্কের স্নেহ
“ছয় মাসের শিশু কন্যা পাইল্যা করলাম বর।
কি লইয়া ফিরবাম দেশে আর না যাইবাম ঘর॥
শুন শুন কন্যা আরে একবার আখি মেইলা চাও।
একটি বার কহিয়া কথা পরাণ জুড়াও॥
আর না ফিরিব আমি আপনার ভবনে।
তোমরা সবে ঘরে যাও আমি যাইবাম বনে॥”
হুমরা বাদ্যা ডাক দিয়া কয় “মাইন্ক্যা ওরে ভাই।
দেশেতে ফিরিয়া মোর আর কার্য্য নাই॥
কয়বর[১] কাটীয়া দেও মহুয়ারে মাটী।
বাড়ীঘর ছাইড়া ঠাকুর আইল কন্যার লাগি।
দুইয়েই পাগল ছিল এই দুইয়ের লাগি॥”
হুমরার আদেশে তারা কয়বর কাটীল।
একসঙ্গে দুইজনে মাটী চাপা দিল॥
বিদায় হইল সব যত বাদ্যার দল।
যে যাহার স্থানে গেল শূন্য সেই স্থল॥
রইল তথা পালং সই সুখদুখের সাথী।
কান্দিয়া পোহায় কন্যা যায়রে দিনরাতি॥
অঞ্চল ভরিয়া কন্যা বনের ফুল আনে।
মনের গান গায় কন্যা বইসা বনে বনে॥
চক্ষের জলেতে ভিজায় কয়বরের মাটী।
শোকেতে পাগল কন্যা করে কান্দাকাটী॥
“উঠ উঠ সখী তুমি কত নিদ্রা যাও।
আমি ডাকি পালং সই একবার কথা কও॥
- ↑ কয়বর = কবর।