( ২ )
পথে
আগরাঙ্গ্যা[১] সাইলের খেত পাক্যা[২] ভূমে পড়ে।
পন্থে আছে বইনের বাড়ী যাইব মনে করে॥
“মায়ের পেটের বইন গো তুমি শুন আমার বাণী।
শীগারে যাইতে শীঘ্র বিদায় কর তুমি॥
ধরে ছিল সাচি পান চুন খয়ার দিয়া।
ভাইয়ের লাগ্যা বইনে দিল পান বানাইয়া॥
উত্তম সাইলের চিড়া গিষ্ঠেতে[৩] বান্ধিল।
ঘরে ছিল শবরী কলা তাও সঙ্গে দিল॥
কিছু কিছু তামুক আর টিক্কা দিল সাথে।
মেলা কইরা[৪] বিনোদ বাহির হইল পথে॥
যতদূর দেখা যায় বইনে রইল চাইয়া।
শীগারে চলিল বিনোদ পালা[৫] কুড়া লইয়া॥
কুড়ায় ডাকে ঘন ঘন আষাঢ় মাস আসে।
জমীনে পড়িল ছায়া মেঘ আসমানে ভাসে॥
গুরু গুরু দেওয়ায় ডাকে জিল্কি[৬] ঠাডা[৭] পড়ে।
অভাগী জননী দেখ ঘরে পুইরা[৮] মরে॥
আইল আষাঢ় মাস জলের বাড়ে ফেনা।
কুড়ার ডাকেতে শুনে বর্ষার নমুনা॥[৯]
মায়ে বইনে না দেখিল বুকে রইল শেল।
কুড়া লইয়া চান্দ বিনোদ কোন বা দেশে গেল॥
একলা থাকিয়া ঘরে কান্দে তার মায়।
কি জানি যাদুরে মোর সাপে বাঘে খায়॥১—২২
- ↑ আগরাঙ্গ্যা = অগ্রভাগ যাহার পাকিয়া রাঙ্গা হইয়াছে।
- ↑ পাক্যা = পাকিয়া।
- ↑ গিষ্ঠেতে = গিঠে, গেড়ো দিয়া কাপড়ে বান্ধিল।
- ↑ মেলা কইরা = যাত্রা করিয়া।
- ↑ পালা =পোষা।
- ↑ জিল্কি = বিদ্যুৎ।
- ↑ ঠাডা = ঠাঠা = বজ্র।
- ↑ পুইরা = পুড়িয়া (দুশ্চিন্তায়)।
- ↑ কুড়ার ডাকেতে—নমুনা = কুড়া পাখীর ডাকে বর্ষা আসিতেছে আভাসে বুঝা যায়।