এই না ভাবিয়া কন্যা কোন কাম করিল।
কাছে আছিল শুধা[১] কলস টানিয়া আনিল॥
“শুনরে পিতলের কলসী কইয়া বুঝাই তরে।
ডাক দিয়া জাগাও তুমি ভিন্ পুরুষেরে॥”
এত বলি কলসী কন্যা জলেতে ভরিল।
জলভরণের শব্দে বিনোদ জাগিয়া উঠিল॥
জলভরণের শব্দে কুড়া ঘন ডাক ছাড়ে।
জাগিয়া না চান্দ বিনোদ কোন কাম করে॥
দেখিল সুন্দর কন্যা জল লইয়া যায়।
মেঘের বরণ কন্যার গায়েতে লুটায়॥
এইত কেশ না কন্যার লাখ টাকার মূল।
শুকনা কাননে যেন মহুয়ার ফুল॥
ডাগল[২] দীঘল আখি যার পানে চায়।
একবার দেখলে তারে পাগল হইয়া যায়॥
“এমন সুন্দর কন্যা না দেখি কখন।
কার ঘরের উজল বাতি চুরি করল মন॥
জাগিয়া দেখ্যাছি কিবা নিশির স্বপন।
কার ঘরের সুন্দর নারী কার পরাণের ধন॥
জলের না পদ্মফুল শুকনায় ফুটে রইয়া।
আসমানের তারা ফুটে মঞ্চেতে ভরিয়া॥[৩]
শুন শুন কুড়া আরে কহি যে তোমারে।
পরিচয়-কথা কন্যার আন্যা দেও আমারে॥
কার বা নারী কার বা কন্যা কোথায় বাড়ীঘর।
উইরে যাওরে বনের কুড়া আন গিয়া উত্তর॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মলুয়া
৫৩