আউলা ঝাউলা[১] অঙ্গের বসন মাথায় কেশ খুলা[২]।
আজি কেন জলের ঘাটে গিয়াছিলা একলা॥
আধা কলসী ভরা দেখি আধা কলসী খালি।
আইজ যে দেখি ফোটা ফুল কাইল দেখ্যাছি কলি॥
কি হইয়াছে জলের ঘাটে সত্য করি বল।
না ভাড়াইও ননদিনী না করিও ছল॥
আইজ সকালে জলের ঘাটে মোদের সঙ্গে চল।
সঙ্গে কইরা কলসী লও ভইরা আনতে জল॥
ঘরে আছে গন্ধতৈল আবের কাকই[৩] দিয়া।
রাতির আইলা[৪] চাচর[৫] কেশ দিবাম বান্ধিয়া॥
তরে[৬] লইয়া ননদিনী আমরা যাইবাম জলে।
মনের কথা কইবাম গিয়া ঐ না জলের ঘাটে॥
বিয়ার বছর হইল, না আইল বর।
এমন যে কন্যা আইজও রইল বাপের ঘর॥
পরথম যৌবন কন্যা পরমসুন্দরী।
তরে দেখ্যা ননদিনী আমরা জ্বল্যা মরি॥”
মলুয়া কহিছে “বউ মোর বাক্য ধর।
একলা যাইতে জলের ঘাটে কেন বা মানা কর॥”
পাচ ভাইয়ের বধু কয় “একলা যাইয়ে চান্দে।
কি জানি চণ্ডালের[৭] কাছে ফালায় তারে ফান্দে॥”
“কালিকার রাত্রি আমার গেছে দারুন জ্বরে।
বেদনা হইছে বধু আমার পেটের কামরে॥
পাতা:মৈমনসিংহ গীতিকা (প্রথম খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৯৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মলুয়া
৫৫