পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী

অনল জ্বলিয়া উঠিল। বৈমাত্রেয় ভ্রাতা কামরান্ পঞ্জাব, কাবুল, কন্দাহার ও ঘাজ্‌নী প্রদেশের অধিকার পাইয়াও সন্তুষ্ট হইতে পারিলেন না,—ভ্রাতার সিংহাসনের প্রতি লোলুপ ঈর্ষাদিগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। ফলে হুমায়ূনের রাজ্যলাভ তাঁহার সুখের হেতু না হইয়া অশান্তি ও বিড়ম্বনায় পর্য্যবসিত হইল। বস্তুতঃ, সিংহাসনারোহণকাল হইতে আরম্ভ করিয়া হুমায়ূনের পরবর্ত্তী জীবনের ইতিহাস— বিপ্লব, বিদ্রোহ, দুর্ঘটনা ও ভাগ্যবিপর্য্যয়ের শোচনীয় পুঞ্জীভূত ঘটনায় পরিপূর্ণ। এই সকল দুর্নিমিত্ত দুর্দ্দৈবের দ্রুততর পটক্ষেপণের মধ্যে স্নিগ্ধমধুর, চিত্তবিমোহন গুল্‌বদন্-চরিত্রের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ বড়-একটা ঘটিয়া উঠে না। কদাচিৎ কখনও যে ঘটনাসূত্রে বিদ্যুৎ চমকের ন্যায় তাঁহার দর্শন এবং পরমুহূর্ত্তেই অদর্শন ঘটে, তখনকার সেই ক্ষণিক চিত্র পাঠকগণের সম্মুখে প্রতিফলিত করিবার জন্যই হুমায়ুনের বিধিবিড়ম্বিত, বিঘ্নবহুল জীবনের ঘটনাপরম্পরার কিঞ্চিৎ ইতিহাস বিবৃত করিতে হইবে।

 বাবরের মৃত্যুর পরেও মহিষী মাহম্ কিছুকাল তাঁহার মৃতকল্প জীবন লইয়া কোনরূপে সংসার-অরণ্যে বিচরণ করেন। রাজ্যের নানাস্থানে বিদ্রোহ ও অশান্তির সূচন। তাঁহাকে প্রত্যক্ষ করিতে হইয়াছিল সন্দেহ নাই; কিন্তু বীরবর বাবরের ভুজবলে জিত ও শাসিত রাজ্যের, এবং প্রাণাধিক পুত্র হুমায়ূনের তেমন কোনও গুরুতর অমঙ্গল সংঘটিত হইবার পূর্ব্বেই, পতিপ্রাণা সাধ্বী স্বামীর অনুসন্ধানে অদৃশ্যলোকে প্রয়াণ করিলেন (৮ই মে, ১৫৩৩)।

১২