পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী

ক্ষমতা-মদমত্ততার পরিচয় পাইয়া হুমায়ূন্ নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিলেন না;—সসৈন্য তাঁহার বিরুদ্ধে অভিযান করিলেন। চুনারদুর্গই তখন শেরের শৌর্য্যপ্রকাশের প্রধান অবলম্বন। বাদ্‌শাহীবাহিনী সর্ব্বাগ্রে এই কেল্লাটি অবরোধ করিয়া বসিল। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, এই অবরোধ শেরের তেমন কোন ক্ষতি বা অনিষ্টের কারণ না হইয়া বরং বিশেষ ইষ্টের কারণই হইয়াছিল। হুমায়ূনের সেনাদল যখন চুনার-অবরোধে ব্যপৃত, তখন শের খাঁ কৌশলে রোহ্‌তাসের সুদৃঢ় গিরিদুর্গ দখল করিয়া বসিলেন, আর তাঁহার দুর্দ্দান্ত সেনাদল মহা উল্লাসে বাঙ্গালার রাজধানী গৌড়ের ধনসম্পদ্ লুঠিতে লাগিল।

 চুনার-দুর্গ করগত করিয়া হুমায়ূন্ গৌড়াভিমুখে অগ্রসর হইলেন বটে, কিন্তু তাঁহার পৌঁছিবার পূর্ব্বেই শের গৌড়ের লুণ্ঠিত ধনরত্নাদি নিরাপদে ও নির্ব্বিঘ্নে রোহ্‌তাস-দুর্গে স্থানান্তরিত করিলেন। হুমায়ূন্ গৌড়ে প্রবেশ করিয়া সেখানকার শোভাসৌন্দর্য্যের মোহে এমনই আকৃষ্ট হইয়াছিলেন যে, তথা হইতে আর শীঘ্র তাঁহার নির্গমনের সম্ভাবনা রহিল না। বিলাসপ্রিয় বাদশাহের প্রমোদমগ্ন দিনগুলি যে কোথা দিয়া কেমন করিয়া অতিবাহিত হইতে লাগিল, তাহা যেন তাঁহার উপলব্ধ হইল না। দুঃখের বিষয়, কিছুকাল এইরূপে অতিবাহিত হইবার পর রাজধানীতে এক বিভ্রাটের সূচনা হইল। হুমায়ূনের শিথিল স্বভাব সম্বন্ধে ইতিমধ্যে অনেক কথাই চারিদিকে প্রচারিত হইয়া পড়িয়াছিল। তাঁহার প্রতি অসন্তুষ্ট কতিপয় আমীর তাঁহার

১৬