পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্

বৈমাত্রেয় ভ্রাতা হিন্দাল্‌কে সিংহাসনে বসাইবার আয়োজন করিতে লাগিলেন। হিন্দাল্ বিদ্রোহী হইলেন। সংবাদ পাইবামাত্র হুমায়ূনের সুখনিদ্রা চকিতে ভাঙ্গিয়া গেল,—তিনি অবিলম্বে আগ্রা যাত্রা করিলেন।

 কিন্তু উদ্যোগী পুরুষসিংহ শের খাঁও এদিকে নিশ্চিন্ত ছিলেন না। হুমায়ূনের প্রত্যাগমন-পথে তাঁহার সহিত যথোপযুক্ত রণসম্ভাষণের আশায় শক্তিসঞ্চয়পূর্ব্বক অপেক্ষা করিতেছিলেন। এক্ষণে বাদ্‌শাহী-বাহিনীকে অগ্রসর হইতে দেখিয়া বক্‌সার ও চৌসার নিকট তাঁহাদের গতিরোধ করিয়া দণ্ডায়মান হইলেন। শোন পার হইয়াই হুমায়ূন্‌কে প্রমাদ গণিতে হইল। উপায়ান্তর না দেখিয়া তিনি সন্ধির প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন। সন্ধির সর্ত্ত লইয়া কয়েক দিন অতিবাহিত হইল। ইতিমধ্যে একদিন রাত্রিশেষে শের অতর্কিতভাবে মোগল-শিবির আক্রমণ করিলেন। এই আক্রমণে অপ্রস্তুত মোগল-বাহিনীর দুর্দ্দশার অন্ত রহিল না;—তাহারা শ্রেণীবদ্ধ হইবার পূর্ব্বেই যুদ্ধের ফলাফল নির্ণীত হইয়া গেল। অনেকে নিরস্ত্র-অবস্থায় আততায়ীর তরবারিমুখে —অনেকে নৌসেতু ভগ্ন হওয়ায় সন্নিহিত নদীগর্ভে প্রাণ হারাইল। হুমায়ূন্-পত্নী, চারি সহস্র মোগল-কুলবধূর সহিত বন্দী হইলেন। কিন্তু শের শত্রু হইয়াও, মোগল-মহিলাগণের সম্বন্ধে যে যথেষ্ট উদারতার পরিচয় দিয়াছিলেন, তাহা সকলেই স্বীকার করেন। তিনি উত্তরকালে তাঁহাদিগকে সসম্মানে প্রত্যর্পণ করিয়াছিলেন।

 নিদ্রোত্থিত সম্রাট্ সহসা শত্রুসৈন্যের বিপুল তরঙ্গোচ্ছ্বাস দেখিয়া

১৭