পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্

হারুণ-অল্-রশিদের চরিত্রের একাংশ আমাদের নয়ন-সম্মুখে উজ্জ্বল হইয়া ফুটিয়া উঠে।

 কিন্তু হুমায়ূন্ চৌসার রণক্ষেত্র হইতে এবার বড় মর্ম্মপীড়া, বড় অপমান বহন করিয়া ফিরিয়াছিলেন। শুধু যে পরাজয়, পলায়ন, সৈন্যক্ষয় তাঁহার এই মর্ম্মপীড়ার কারণ তাহা নহে; চৌসার রণতরঙ্গে বাদ্‌শাহী হারেমের কতিপয় সুন্দরী তৃণখণ্ডের মত কোথায় যে ভাসিয়া গেল, অনেক অনুসন্ধানেও তাহার নির্ণয় হইল না। এই নিরুদ্দিষ্টা ললনাগণের মধ্যে হুমায়ূনের পরম স্নেহের শিশুকন্যা আকীকা অন্যতমা। এই শিশুকন্যার জন্য সম্রাট্ বড়ই কাতর হইয়াছিলেন।

 ১৫৩৭ খ্রীষ্টাব্দে হুমায়ূন্ গৌড়ে অভিযান করেন, আর ১৫৩৯ খ্রীষ্টাব্দে চৌসার যুদ্ধ। সুতরাং দুই বৎসর পরে বাদশাহ্ আগ্রা প্রত্যাবর্ত্তন করেন। এই অত্যল্পকালের মধ্যে বাদশাহের মাথার উপর দিয়া অচিন্তিতপূর্ব্ব কতই না পরিবর্ত্তনের স্রোত বহিয়া গিয়াছে! হুমায়ূন্ তাঁহার চিরপরিচিতা প্রাণাধিকা ভগিনী গুল্‌বদনের মুখের দিকে প্রশ্নপূর্ণ বিস্মিত-দৃষ্টিতে চাহিলেন— এ কে? তিনি যেন তাহাকে চিনিয়াও চিনিতে পারিলেন না। হুমায়ূন্ গৌড়-অভিযানকালে গুলের অবিবাহিতা বালিকা-মুর্ত্তি,— শিরে কুমারীর ‘তাক্’— দেখিয়া গিয়াছিলেন। আর আজ,— এ যে সদ্যোপ্রস্ফুটিত গোলাপের মত যৌবন-লাবণ্যে ঢল ঢল করিতেছে; শিরে তাহার পরিণীতা রমণীর শিরোভূষণ—লচক্!

 বস্তুতঃ ইতিমধ্যে চঘ্‌তাই-বংশীয় পিঞ্জর্ খাজা খাঁর সহিত

১৯