পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী

পর্য্যবসিত হয় নাই; শত্রুনিক্ষিপ্ত তীরের শতধারার মধ্য দিয়া তিনি তাঁহাদের নিরাপদে লাহোরে পৌঁছাইয়া দেন।

 ইহার পর হুমায়ূন্‌ও লাহোরে আসিয়া কামরানের শরণাপন্ন হইলেন। কুচক্রী কামরানের মনস্কামনা পূর্ণ হইল; ভাবিলেন, ভাগ্য এতদিনে সুপ্রসন্ন,—পথের কণ্টক আপনিই পথ বাহিয়া অনলকুণ্ডে আত্মবিসর্জ্জন করিতে আসিয়াছে! কিন্তু ধূর্ত্ত কামরান্ বাহিরে সে ভাবের আভাসমাত্রও প্রকাশ না করিয়া মুখে ভ্রাতৃপ্রেমের পরাকাষ্ঠা দেখাইতে লাগিলেন। সরল-স্বভাব হুমায়ূন্ যে কামরানের ছলনায় ভুলিবেন, তাহাতে আর আশ্চর্য্য কি? তিনি নিশ্চিন্ত মনে তাঁহার সহিত কর্ত্তব্য সম্বন্ধে মন্ত্রণা করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। তাঁহার অপর দুই ভ্রাতা হিন্দাল্ ও অস্করীও অবশ্য এই মন্ত্রণায় যোগদানের অধিকার হইতে বঞ্চিত হইলেন না। কিন্তু দিনের পর দিন শুধু মন্ত্রণাই হয়, শূন্যগর্ভ বাক্‌সর্ব্বস্ব মন্ত্রণা আর কোন শুভফল প্রসব করে না,— হুমায়ূন্‌ও কোন স্থিরসিদ্ধান্তে উপনীত হইতে পারেন না। ভ্রাতৃদ্রোহী রাজ্যলোলুপ কামরান্ পরামর্শদানের ছলনায় অগ্রজকে লাহোরে ধরিয়া রাখিয়া শত্রুকর্ত্তৃক বিপন্ন করিবার চেষ্টায় ছিলেন। তাঁহার মনে এইরূপ দুরভিসন্ধি জাগিতেছিল যে, শের শাহের সহিত এই সুযোগে সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইয়া পঞ্জাব ও লাহোর হস্তগত করিবেন। যদি একান্তই তাহাতে অকৃতকার্য্য হ’ন, তখন কাবুল লইয়া বুঝা-পড়া। কাবুল হুমায়ুনেরই প্রদত্ত রাজ্য। নিরুপায় হুমায়ূন্ শেষে অবশ্যই উহার জন্য লালায়িত হইবেন। কিন্তু

২৪