এ যাবৎ তিনি স্বামীকে কখনও কোন পত্র লেখেন নাই; —খাঁও তাঁহার হস্তাক্ষরের সহিত পরিচিত নহেন। এখন তাঁহাকে পত্র লিখিলে তিনি উহা জাল চিঠি ভাবিতে পারেন। গুল্ আরও বলিলেন,—‘খাঁ যখন অন্যত্র অবস্থান করেন, তখন চিঠিপত্র পুত্রকে উদ্দেশ করিয়া লেখেন।’ এইরূপ বুঝাইয়া তিনি কামরান্কেই পত্র লিখিতে উপদেশ দিলেন। গুল্বদনের বয়স এ সময় ২৫ বৎসর হইবে। চাতুরী-বৃদ্ধ কামরান্ আজ এই বুদ্ধিমতী যুবতীর কাছে কূটনীতিতে পরাজিত হইলেন। গুলের উপদেশ সমীচীন মনে করিয়া তিনি অবিলম্বে খাঁকে সসম্মানে কাবুলে আসিবার জন্য অনুরোধ করিয়া পাঠাইলেন।
গুল্বদন্ চিরদিনই হুমায়ূনের প্রতি আন্তরিক স্নেহশীলা— তাঁহার প্রকৃত হিতৈষিণী। তিনি ইহার বহুপূর্ব্বে বারবার স্বামীকে বলিয়া রাখিয়াছিলেন,—‘তোমার আর-সব ভাইরা কামরানের স্বপক্ষে থাকুক, ক্ষতি নাই; কিন্তু ভগবান্ করুন, কামরানের দলভুক্ত হইবার বাসনা ঘূণাক্ষরেও যেন কখন তোমার মনে স্থান না পায়। সাবধান! সহস্রবার সাবধান! কখনও সম্রাট্ হুমায়ূনের পক্ষ ত্যাগ করিও না।’ খাঁর হৃদয়ে পত্নীর সাবধান-বাণী চিরজাগরুক ছিল। কামরানের দুরভিসন্ধি ব্যর্থ হইল।
হুমায়ূন্ সৈন্যসংগ্রহ করিয়া, কামরানের হস্ত হইতে কাবুল পুনরুদ্ধার করিলেন (১৫৪৭, এপ্রিল)। ভীত কামরান্ ভ্রাতার নিকট ক্ষমা ভিক্ষা করিয়া প্রতিশ্রুত হইলেন যে, ভবিষ্যতে আর কখনও তাঁহার বিরুদ্ধাচরণ করিবেন না;—বরং কায়মনোবাক্যে
৩৩