পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্

ত্যাগ করিতে পারিলেন না। তিনি ভ্রাতার হস্ত হইতে রাজদণ্ড কাড়িয়া লইবার অভিপ্রায়ে পুনরায় বদ্ধপরিকর হইলেন;—ইহাই তাঁহার শেষ উদ্যম। অতি গোপনে তাঁহার সৈন্য-সংগ্রহ হইতে লাগিল। কিন্তু সে সংবাদ হুমায়ূনের অবিদিত রহিল না। তিনি অবিলম্বে কৃতঘ্ন ভ্রাতাকে দমন করিবার জন্য হিন্দাল্‌কে সঙ্গে লইয়া যুদ্ধযাত্রা করিলেন। কামরান্ রাত্রিযোগে (২০শে নবেম্বর, ১৫৫১) জিরবর নামক স্থানে অতর্কিতভাবে হুমায়ূনের শিবির আক্রমণ করেন। এই অভাবনীয় বিপদ্‌পাতে হিন্দাল্ আত্মপ্রাণ-বিসর্জ্জনে সম্রাটের প্রাণরক্ষা করিয়াছিলেন। সে আত্মদানের করুণ কাহিনী গুলের ভাষায় আমরা লিপিবদ্ধ করিবঃ—

“সম্রাট্-সৈন্য জিরবরে উপস্থিত হইলে সংবাদ আসিল, কামরান্‌ রাত্রিযোগে হুমায়ূনের শিবির আক্রমণ করিবেন। হিন্দাল্ অবিলম্বে ভ্রাতা হুমায়ূনকে জানাইলেন,—‘সর্ব্বোচ্চ ভূমিতে সম্রাটের শিবির সন্নিবিষ্ট হউক এবং শিশুপুত্র আক্‌বরকে লইয়া সম্রাট্ সুরক্ষিতভাবে তথায় অবস্থিতি করুন।’
“সম্রাট ও ভ্রাতুষ্পুত্র সম্বন্ধে এইরূপ সুব্যবস্থা করিয়া বীরশ্রেষ্ঠ হিন্দাল্ একে একে আপন অনুচরবর্গকে আহ্বান করিয়া বলিলেন,—‘মনে রাখিও, সম্রাটের হিতার্থে তোমাদের আজীবনের অনুষ্ঠান, আজিকার একদিনের আত্মোৎসর্গের সমান। খোদার কৃপায় আজিকার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইলে ধন, মান, প্রভুত্ব—যাহার যাহা কিছু যাচ্ঞা, আমি

৩৫