পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্
অশ্ব হইতে অবতরণ করিল না। দুইবার শত্রুর আক্রমণ ব্যর্থ করিয়া হিন্দাল্ ধরাশায়ী হইলেন।
“মীর বাবা দোস্ত হিন্দালের মৃতদেহ বহন করিয়া তাঁহার শিবিরাবাসে লইয়া গেলেন। পাছে বাহিনীমধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়, এই আশঙ্কায় তিনি শিবিরদ্বারে প্রহরী রাখিয়া বলিয়া দিলেন যে, রাজভ্রাতা আহত; সম্রাটের আদেশ,—কাহারও প্রবেশ নিষেধ। মীর তৎপরে সম্রাটের নিকট উপস্থিত হইয়া বিষণ্নমুখে কহিলেন,—‘মীর্জ্জা হিন্দাল্ আহত।’ হুমায়ূন্ তৎক্ষণাৎ অশ্ব আনিতে আদেশ দিয়া বলিলেন,—‘আমি এখনই তাহাকে দেখিতে যাইব।’ মীর দৃঢ়স্বরে বলিল,—‘মীর্জ্জার আঘাত সাঙ্ঘাতিক; সম্রাটের সেখানে যাওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। সম্রাটের আর বুঝিতে বাকি রহিল না। ব্যথিত হুমায়ূন্ বারবার আত্মসংযমের চেষ্টা করিলেও ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গিয়া তাঁহার অশ্রুপ্রবাহ ছুটিল। কিন্তু কর্তব্য শোকের মুখ চাহে না; বুক ভাঙ্গিয়া গেলেও সে তাহার কঠোর দায়িত্ব বিস্মৃত হয় না। অশ্রু মুছিয়া হুমায়ূন্ খিজর্ খাঁকে নির্দ্দেশ করিলেন,—‘মীর্জ্জা হিন্দালের মৃতদেহ তোমার জাগীর জূই-শাহীতে লইয়া গিয়া কবরের ব্যবস্থা কর।’
“উষ্ট্রের উপর শবাধার স্থাপিত হইলে, খিজর্ মর্ম্মভেদী বিলাপে দিঙ্মণ্ডল মুখরিত করিয়া, তাহার মুখরজ্জু ধরিয়া ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। সে হৃদয়বিদারী স্বর

৩৭