পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মোগল-বিদুষী

বিশেষতঃ সম্রাট্ এখনও বালক, স্বার্থপর সংসারের ছায়াপাতে হৃদয় এখনও কঠিন হয় নাই। স্বজনগণকে লইয়া সম্রাট্ মানকোটের শিবিরে ফিরিয়া আসিলেন। তিনি প্রথমে মানকোট হইতে লাহোর, তৎপরে লাহোর হইতে ১৫৫৭ খ্রীষ্টাব্দের ৭ই ডিসেম্বর সপরিবারে দিল্লী যাত্রা করিলেন। এ কয়েক মাস সম্ভবতঃ রাজপরিবারবর্গ সম্রাট্-শিবিরের সন্নিকটে শিবিরাবাসে কালযাপন করিয়াছিলেন।

 ১৫৫৭ খ্রীষ্টাব্দে ভারতে পুনরাগমন হইতে ১৫৭৪ খ্রীষ্টাব্দে তীর্থগমন পর্য্যন্ত দীর্ঘ সতর বৎসর কাল, আমাদের এই ক্ষুদ্র আখ্যায়িকার নায়িকা, নিজ জীবনেতিহাসের উপর দুর্ভেদ্য পটক্ষেপণ করিয়াছেন। ‘হুমায়ূন্-নামা’ পাঠে অতি অনবহিত পাঠকেরও উপলব্ধ হয় যে, এই আত্মগরিমাশূন্যা রমণী নিজ জীবন-কাহিনী সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন,—একেবারে নির্ব্বাক্ বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। এমন কি প্রসঙ্গতঃ সাদৎ-ইয়ার ব্যতীত তিনি তাঁহার অপর পুত্রকন্যাগণেরও উল্লেখ করেন নাই। লোকলোচনান্তরালস্থিত মোগলের অন্তঃপুর হইতে নিবিড় অবগুণ্ঠনবতী এই রমণীর রমণীয় আখ্যান শুনিয়া তাঁহার অন্তরের সহিত ঘনিষ্ঠতর পরিচয়ের জন্য আগ্রহ হয়; কিন্তু সে প্রয়াস পুনঃ পুনঃ নিস্ফল হইয়া ফিরিয়া আসে। কল্পনা-নেত্রে আমরা দেখিতে পাই যে নিত্যকর্ম্মের বিরামে তাহার অবসরকাল এখন কবিতা-রচনায়, বিবিধ পুস্তক-পাঠে, সাম্রাজ্যের সংবাদ-আলোচনায়, কদাচিৎ বা উৎসবানন্দে অতিবাহিত হইতেছে। তাঁহার প্রচ্ছন্ন জীবনের যে চিত্রটি আমাদের

৪২