পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৫০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মোগল-বিদুষী

সেই অনুচরকে হত্যা করিবার জন্য তাঁহার পরিচারিকাকে আদেশ দেন। এরূপ করিবার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে আইস্ সগর্ব্বে বলিয়াছিলেন,—‘আমি ইউনুস্ খাঁর ধর্ম্মপত্নী!’ এই সংবাদ মোগল মহিলাগণের নিশ্চয়ই অবিদিত ছিল না। গুল্ও পারিবারিক-ইতিহাসে দেখিয়াছেন, তাঁহার স্বজাতীয়া বহু বন্দিনী শত্রুর সহিত পরিণীতা হইয়াছে এবং তাহাদের মধ্যে কেহ কেহ শক্রর দেশে পতিসহ সুখে-স্বচ্ছন্দে জীবনযাত্রা নির্ব্বাহ করিতেছে।

 কিন্তু হিন্দু-মহিলাগণের দাম্পত্যজীবন ও সতীধর্ম্ম তৈমুর-বংশোদ্ভব মহিলাগণের আদর্শ হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। রাজপুতরমণী বন্দিনী হইবার আশঙ্কায় উল্লাসে জীবন দান করে; রাজপুতগণ অসম-শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হইলে স্বহস্তে স্ত্রীপুত্রকন্যাগণকে হত্যা করিয়া, মৃত্যুযজ্ঞে জীবনাহুতি দেয়। শৈশবে পিতৃমুখে গুল্ বহুবার এই বিস্ময়কর কাহিনী শুনিয়াছেন; কিন্তু তখন তিনি বালিকা। এখন পতিপুত্রবতী নারী—সমাজের কঠিন সমস্যাগুলি উদারভাবে গ্রহণ করিতে শিখিয়াছেন। তারপর আক্‌বরের রাজ্যাঙ্কের প্রথমভাগে বহুবার সেই নিদারুণ মর্ম্মস্পর্শী দৃশ্যের অভিনয় হইয়াছে। মৃত্যুভয় এবং কঠোরতম যন্ত্রণা উপেক্ষ করিয়া হিন্দু-বিধবার স্বেচ্ছায় অগ্নিতে আত্মসমর্পণে, সতীধর্ম্মে গৌরবের আত্মবিসর্জ্জনে, কে জানে মুসলমান-রমণীর হৃদয় শ্রদ্ধায় পুষ্পিত হইয়া উঠিত কি না? ভ্রাতুষ্পুত্র আক্‌বরের হারেমে রাজপুত-ললনার সমাগমে গুল্‌বদন্ হিন্দু-রমণীগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রকৃতি-প্রবৃত্তি প্রভৃতির ঘনিষ্টতর পরিচয় পাইবার সুযোগ

৪৪