হইয়াছে; তখনও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। পথ বিপদাকীর্ণ, গ্রামবাসী রাজপুতগণ নবীন বন্ধন ছেদন করিবার জন্য সশস্ত্র ফিরিতেছে। সম্ভবতঃ রাজআত্মীয়াগণকে বাদশাহী ফৌজের সাহায্যে এক সেনা-নিবাস হইতে অপর সেনা-নিবাস পর্য্যন্ত নিরাপদ পথ-অবলম্বনে গমন করিতে হয়। মোগল-সৈন্য তখন রাজপুতকুলতিলক রাণা প্রতাপের বিরুদ্ধে নিযুক্ত; অনুমান হয়, যাত্রীদল এই বাহিনী-সহায়ে, অবসাদক্লিষ্ট বক্রপথে গোগুণ্ডা হইতে আহ্মদাবাদ, এবং তথা হইতে জলপথে সুরাট গমন করেন।
সমুদ্রপথ সে সময় নিরাপদ থাকিলেও যাত্রিগণকে এক বৎসর বন্দরে অপেক্ষা করিতে হইয়াছিল। আক্বর-নামায় প্রকাশ, সমুদ্রযাত্রার জন্য রাজ-অর্ণবপোত ‘ইলাহী’ নির্দ্দিষ্ট ছিল। ইহা ছাড়। ‘সলীমী’ নামক তুর্কী জাহাজও ভাড়া করা হয়। রাজমহিলাগণ ‘সলীমীতে’ আরোহণ করিলে, ‘ইলাহী’-আরোহিণীগণের মধ্যে অকারণ পর্ত্তুগীজ-জলদস্যু-ভীতি সঞ্চারিত হইয়াছিল। কিন্তু ইহাই বিলম্বের প্রকৃত কারণ বলিয়া মনে হয় না। ভারতসাগরে পর্ত্তুগীজগণের তখন প্রবল প্রতাপ; যথারীতি শুল্ক দিতে না পারিলে জলযাত্রার অনুমতি-পত্র মিলিত না। মিলিলেও তাহাতে ত্রাসের অবসান হইত না,—গুল্মাচ্ছাদিত কুপের ন্যায় অনেক সময় ছাড়পত্রে সাঙ্কেতিক ভাষায় হত্যার ইঙ্গিত প্রচ্ছন্ন থাকিত। যাহা হউক, এই অনুমতি-পত্রের অভাবই যে বিলম্বের কারণ তাহাতে সন্দেহ নাই।[১]
- ↑ পর্ত্তুগীজদিগকে দামানের নিকটবর্ত্তী বুল্সার গ্রামখানির অধিকার দিয়া,
৪৮