পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হুমায়ূন্-নামা

 হুমায়ূন-নামার প্রথমাংশে বাবরের কথা। ইহার অধিকাংশই বাবর বাদশাহের আত্মকথা হইতে গৃহীত। পিতার মৃত্যুকালে গুলবদনের বয়স মাত্র আট বৎসর, সুতরাং তাঁহার নিকট হইতে বাবরের রাজত্বকালের চাক্ষুষ বিবরণ জানিবার আশা করা যায় না।

 ইতিহাসের দিক্ হইতে হুমায়ূন্-নামার একটা বিশেষ সার্থকতা আছে। ইহা আবিষ্কৃত না হইলে বোধ হয় বাবরের পুত্রকন্যা, আত্মীয়স্বজন ও সে যুগের কয়েকটি পরিবারের সঠিক বৃত্তান্ত আমাদের নিকট অজ্ঞাত থাকিয়া যাইত। বাবর ও হুমায়ূনের জীবনী-লেখক আরস্কিন্ (Erskine) সাহেবেরও হুমায়ূন-নামা দৃষ্টিগোচর হয় নাই। ইহার সাহায্য পাইলে তাঁহার গ্রন্থে বর্ণিত বাবর ও হুমায়ূনের পরিবারবর্গের কাহিনী অধিকতর সম্পূর্ণতা লাভ করিত। হুমায়ূন্-নামা আকবরের বাল্যজীবনের ইতিহাসের উপরও বিশেষ আলোকপাত করে।

 নিজের অখ্যাতি দোষত্রুটি গোপন করাই মনুষ্য-চরিত্রের পক্ষে স্বাভাবিক। শাহ্ ইসমাইলের অধীনতা-স্বীকার, ঘাজ্‌দওয়ানের পরাজয়, আলাম্ লোদীর (সুলতান আলাউদ্দীনের) প্রতি অন্যায় আচরণ,—এ সব কথা বাবর তাঁহার আত্মকাহিনী ‘তুজুক-ই- বাবুরী’তে গোপন করিয়াছেন। জহাঙ্গীরও পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও শের আফ্‌কনের মৃত্যুর কারণ আত্মকাহিনীতে যথাযথ উল্লেখ করেন নাই। এমন কি স্নেহময়ী গুল্‌বদনও স্নেহের আতিশয্যে সহোদর হিন্দাল, ও বৈমাত্রেয় ভ্রাতা হুমায়ূনের দোষত্রুটি ঢাকিবার

৬১