পাতা:মোগল-বিদুষী.djvu/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গুল্‌বদন্

সর্ব্বজ্যেষ্ঠা, তারপর গুল্‌চিহ্‌রা, তৎপরে পুত্র আবূ-নাসির—ইতিহাসে যিনি হিন্দাল্ নামে প্রসিদ্ধ, আবু-নাসিরের পরেই গুল্‌বদন্, গুলের পরে আল্‌ওয়ার নামে এক পুত্র।

 মাহম্‌কে বাবরের পাটরাণী বলা যাইতে পারে। তাঁহার গর্ভেই বাদশাহের জ্যেষ্ঠপুত্র— সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হুমায়ূনের জন্ম। সম্রাটের হৃদয়-রাজ্যে এবং পৌরজনমধ্যে মাহমের অসীম প্রভাব-প্রতিপত্তির পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু এই পতিসোহাগিনীর জীবনে একটি বড় ক্ষোভের কারণ ঘটিয়াছিল। তাঁহার যতগুলি সন্তান জন্মে, একমাত্র হুমায়ূন ব্যতীত একটিও জীবিত ছিল না—একে একে সবগুলিই শৈশবে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। গুল্‌বদন্ যখন সবে দুই বৎসরের বালিকা, তখন মাহম্ তাহাকে কন্যারূপে গ্রহণ করেন। ইতিপূর্ব্বেই মাহম্‌কে চারিটি সন্তানের বিরোগ-বেদনা সহ্য করিতে হইয়াছিল। সন্তান-বিয়োগ-বিধুরা জননী স্নেহের ক্ষুধা মিটাইবার জন্যই হউক, অথবা নিজ শিশু-সন্তানের অভাবে দিল্‌দারের গর্ভজাত কন্যাকে পরমস্নেহে প্রতিপালন করিয়া স্বামীর তৃপ্তিসাধনের জন্যই হউক, গুল্‌কে আপনার অঙ্কে তুলিয়া লইয়া থাকিবেন। কিন্তু ইহাই শেষ নহে, দিলের অন্যতম পুত্র হিন্দাল্ যখন চারিদিনের শিশু, তখন তাহাকেও তিনি দত্তকরূপে গ্রহণ করেন। মহিষী দিল্‌দারের যে ইহাতে আপত্তি ছিল না, এমন নহে—আপত্তি যথেষ্টই ছিল। কিন্তু তিনি নিরুপায়;—মাহমের হস্তে গৃহের সর্ব্বময় প্রভুত্ব, তাহার উপর স্বামীর অভিপ্রায়;