মোগল যুগে স্ত্রীশিক্ষা সম্বন্ধে আমরা সর্ব্বাগ্রে বাদশাহ্গণের অন্তঃপুরের সন্ধান লইতে চাই; কেন-না সেখানেই অবরোধ-প্রথা আপনার প্রভাব পূর্ণমাত্রায় বিস্তার করিবার অবকাশ পাইয়াছিল। অসার আমোদ-প্রমোদ ও বিলাসে বিভোর হইয়া মোগল শুদ্ধান্ত-বাসিনীবৃন্দ অত্যন্ত শোচনীয়ভাবে তাঁহাদের অশিক্ষিত জীবন যাপন করিতেন, ইহাই সাধারণের ধারণা। কিন্তু ইতিহাসে আমরা যে-সকল মোগল-মহিলার পরিচয় পাই, তাঁহাদের মধ্যে অনেকেরই বিদ্যাবত্তা ও জ্ঞানের উৎকর্ষ সত্যসত্যই আমাদিগকে বিস্ময়বিমুগ্ধ করে। তাঁহাদের সুশিক্ষার পরিচয়—তাঁহাদের স্বরচিত গ্রন্থে ও কাব্যে—তাঁহাদের ভাবের নির্ম্মলতায়, সুনিয়ন্ত্রিত চিন্তাধারায়, কলাকুশলতায় এবং বিশুদ্ধ রুচিতে বিশেষভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি হইতে আরম্ভ করিয়া, আমরা সংক্ষেপে এই তথ্যের আলোচনা করিব।
যে-সকল পুণ্যশীলা, দানরতা, জ্ঞানগরিমাশালিনী মহিয়সী মহিলার নাম মোগল-ইতিহাসের পৃষ্ঠায় স্বর্ণাক্ষরে অঙ্কিত বাবর ও হুমায়ূনের
রাজত্বকাল থাকিবার যোগ্য, বেগম গুল্বদন্ তাঁহাদের অন্যতমা। তিনি ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের স্থাপয়িতা অক্লান্তকর্ম্মী, অধ্যবসায়-শীল সম্রাট্ বাবরের কন্যা, উত্থান-পতনের বিচিত্র লীলানায়ক