হুমায়ূনের বৈমাত্রেয় ভগিনী, এবং মোগলকুলচন্দ্র ‘দিল্লীশ্বরো বা জগদীশ্বরো বা’ আখ্যার যোগ্যতম অধিকারী বাদশাহ্, আকবরের পিতৃষ্বসা। গুল্বদনের সুদীর্ঘ জীবন ভূয়োদর্শনের আদর্শ; তিনি যথাক্রমে বাবর, হুমায়ূন ও আকবর—মোগল-বংশের এই তিন জন কৃতী পুরুষের অভ্যুদয়, ভাগ্যবিপর্য্যয় এবং প্রতিষ্ঠা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করিয়া মানব-জীবন সম্বন্ধে অপরিসীম অভিজ্ঞতা-সঞ্চয়ের সুযোগ পাইয়াছিলেন। এই অনন্যসুলভ অভিজ্ঞতার সঙ্গে তাঁহার স্বাভাবিক ধর্ম্মানুরাগ, কর্ত্তব্যনিষ্ঠা ও স্নেহ-মমতার অপূর্ব্ব মিশ্রণ তাঁহার জীবনকে এক অভাবনীয় বৈশিষ্ট্য দান করিয়াছে। অন্যান্য মহিলার ন্যায় গুলবদনও সুখে-দুঃখে সংসারযাত্রা নির্ব্বাহ করিয়াছেন। তাঁহার সুদীর্ঘ জীবনে কখন তিনি রাজকার্য্যে কোন প্রকারে হস্তক্ষেপ করেন নাই সত্য, কিন্তু তথাপি তাঁহার জীবন ব্যর্থ নহে। তিনি যে ‘হুমাযুন্-নামা’ রচনা করিয়াছিলেন, সেই বহুমূল্য গ্রন্থই তাঁহার জীবনের অপূর্ব্ব গৌরবময়ী কীর্ত্তি। কেবল এই একটিমাত্র কার্য্য করিয়াই তিনি মরজগতে চিরস্মরণীয় হইয়া গিয়াছেন, এই কারণেই তিনি ইতিহাসবেত্তাগণের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার অর্ঘ্য লাভের অধিকারিণী; আর এই জন্যই তাঁহাকে মোগল বিদুষীদিগের অন্যতমা বলিয়া অসঙ্কোচে নির্দ্দেশ করিতে পারা যায়।
কয়েক বৎসর পূর্ব্ব পর্য্যন্ত যে-সমস্ত ইংরেজ ঐতিহাসিক মোগল