পাতা:মোগল যুগে স্ত্রীশিক্ষা.djvu/২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মোগল যুগে স্ত্রীশিক্ষা

সেই মিহ্‌র। নন্দনের কুসুমে তাঁহার হারেম পরিপূর্ণ, কিন্তু সেখানে পারিজাত নাই। বৃথা দিল্লীর সিংহাসন, বৃথা মোগল সাম্রাজ্যের অতুল ঐশ্বর্য্য, বৃথা তাঁহার জীবনধারণ,—মরু-দুহিতা মিহ্‌র বিহনে সব মরুময়। এই দুর্ল্লভ রমণী-মণি লাভ করিবার জন্য সম্রাট্ শের আফ্‌কন্‌কে হত্যা করাইলেন। মিহ্‌র তাঁহার হারেমে আসিলেন। মুগ্ধনেত্র সম্রাট দেখিলেন, যে কিশোরকলিকা এক দিন তাঁহার করচ্যুত হইয়াছিল, আজি তাহা প্রস্ফুট কুসুম—বিদ্যা-বুদ্ধি-প্রতিভার সৌরভে গৌরবময়ী। আজ সম্রাটের মনে হইল, তাঁহার ভুবনবিজয়ী জহাঙ্গীর নাম সার্থক হইয়াছে। কিন্তু ধীরে ধীরে সম্রাট্‌কে সম্পূর্ণ করায়ত্ত না করিয়া মিহ্‌র আত্মসমর্পণ করিলেন না। ক্রমে সম্রাট্‌, সিংহাসন, সাম্রাজ্য—একে একে সকলই মিহ্‌রের করগত হইল। জহাঙ্গীর আদরে তাঁহার নামকরণ করিলেন—নূরজহান্

 ঐতিহাসিকগণ মুক্তকণ্ঠে বলিয়াছেন, জহাঙ্গীরের রাজত্বের শেষভাগকে নূরজহানের রাজত্বকাল বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সম্রাট্ নিজেই বলিতেন, ‘নূরজহান্‌কে আমি তীক্ষ্নবুদ্ধিশালিনী ও রাজ্যভার-গ্রহণের উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া তাঁহার উপর শাসনকার্য্যের সমস্ত ভার অর্পণ করিয়াছি। আমি মাত্র একটু মদ্য ও কিঞ্চিং মাংস পাইলেই সন্তুষ্ট।’ প্রকৃতপক্ষে রাজ্যের যাবতীয় কার্য্যই নূরজহান্ কর্ত্তৃক পরিচালিত হইত—জহাঙ্গীর নামেমাত্র

১৩