পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:) C Հ মোহন অমনিবাস যুবক একবার তার মুখের দিকে চেয়ে সেখান থেকে উঠে গেল। একজন বললে, “এ লোকটাকেও আমার সন্দেহ হয়।” ... " পাশের অন্য যুবক ক্রুদ্ধ হয়ে বললে, আমার বন্ধুকে যে সন্দেহ করে, তা’র মুখ দর্শন করলেও পাপ হয়।” যুবকটি পিছন ফিরে বসলো। রমা বললেন, “আসুন, আমার একটু ঘুরে বেড়াই।” আমি সামনে রমার সঙ্গে জাহাজের সম্মুখ দিকে অগ্রসর হতে লাগলুম। এক সময়ে ক্যাপ্টেন আমাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “মোহনের নতুন কীর্তি সব শুনেছেন, মিঃ চন্দ?” আমি মৃদু হেসে বললুম, “হাঁ শুনেছি। শুনলাম, আপনার ঘড়ি পাওয়া গেছে—সত্য?” ক্যাপ্টেনের মুখে অপ্রতিভ-হাসি ফুটে উঠল; বললেন, “হাঁ। লোকটার রসবোধও পুরো মাত্রায় আছে। আমি ভেবে পাই না, সে কি কোরে আমার ড্রয়ার থেকে চুরি করে? সবচেয়ে বিস্ময়জনক ব্যাপার, সেকেণ্ড অফিসারের প্যান্টের পকেটে কি কোরে রেখে গেল? লোকটা কি অদৃশ্য হবার ক্ষমতা রাখে, মিঃ চন্দ?” আমি বিস্মিত হয়ে বললুম, “আশ্চর্য শক্তি আছে স্বীকার করতেই হবে। ভাল কথা, আপনার আয়ারলেস মেশিন সারা হয়েছে তো ? “না, সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।” ক্যাপ্টেন হতাশ স্বরে বললেন। আমি বললুম, “তবে আর কোন সংবাদই দস্য সম্বন্ধে পাননি?” “কি কোরে আর পাবো, মিঃ চন্দ? এখন আজকের দিন ও রাত্রিটা কেটে গেলে আমি নিশ্চিন্ত হই।” ক্যাপ্টেন আমাদের অভিবাদন কোরে চলে গেলেন। আমরা জাহাজের সম্মুখে দুটি লৌহ-স্তম্ভের উপর উপবেশন করলুম। জাহাজ পুণ-গতিতে চলেছে। সমুদ্র শান্ত। রৌদ্র-কিরণ গাঢ় নীল জলের ওপর অদ্ভুত দৃশ্যের অবতারণা করছিল। রমা স্নিগ্ধ-দৃষ্টিতে চেয়ে বসেছিলেন। এক সময়ে আমার দিকে চেয়ে বললেন, “আপনার কিন্তু বিশেষ পরিচয় দেননি আমাকে।” আমি মৃদু হেসে বললুম, “আমার নাম শুনেছেন। আমার বাপ-মা, আত্মীয়স্বজন কেউ নেই। ভবঘুরে জীবন বলাই চলে। ভগবান অর্থাভাব দেননি আমাকে আমার এখন একান্ত কামনা, মিস সোম, আমি যেন পাঁচজনের মত ঘর বঁধি, সংসার করি। পাঁচজনের হয়ে পড়ে।” %. রমা সলজ্জ দৃষ্টিতে চেয়ে বললেন, “আপনার বাড়ী তো কলকাতাতেই, মিঃ চন্দ?” আমি বললুম, “হা। তবে অন্যান্য স্থানেও আমার কয়েকটা বাড়ী আছে, মিস সোম। আমার সব আছে, আবার আমার কিছুই নেই।” মিস সোম চকিতে একবার মুখ তুলে চেয়ে বললেন, “আপনি তো ইচ্ছা করলেই নিজের বাসনা পূর্ণ করতে পারেন, মিঃ চন্দ।” “পারি?’ আমার কণ্ঠে উল্লাস ব্যক্ত হ’ল। আমি নিজেকে যেন আর ধ’রে রাখতে পারছিলাম না। পুনরায় আবেগ ভরা স্বরে বললুম, “আপনি বলছেন, আপনি অভয় দিচ্ছেন, মিস সোম?” *