পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> Obr মোহন অমনিবাস বৈশাখ শুক্রবার (আপনার পত্র প্রাপ্তির ঠিক এক সপ্তাহ পরে) রাত্রি ঠিক ১১টার সময় স্বয়ং উপস্থিত হইব এবং আমার ইচ্ছা কার্যে পরিণত করিব। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমি যে কেবল ঐ বস্তুগুলি লইয়াই সন্তুষ্ট হইব, তাহা শপথ করিয়া বলিতে পারি না। অধিক লেখা বাহুল্য মাত্র।” আপনারই বশংবধ পুনশ্চঃ “দেখিবেন, যেন হস্তিদন্ত নির্মিত বড় চেয়ারগুলি পাঠাইবেন না। কারণ আমি জানি, সেগুলি আসল হাতির দাঁতে তৈরী নয়। আর শুধু স্বর্ণে নির্মিত বড় আলমারিটাও আমাকে পাঠাইবেন না যেন, কারণ তাহা যে বাজে পান-মরা সোনার তৈরী, তাও আমি বিশেষভাবে জানি। স্মরণ রাখিবেন, উত্তর দিকের ছোট সিন্দুকটার সব হীরাগুলোই যেন পাঠানো হয়। একটা পিস কম হইলেও আমি জানিতে পারিব।” পত্ৰখানি মহারাজকুমার নিত্যবিক্রমের মনে মহা ঝড় প্রবাহিত করিল। যদি পত্ৰখানি দসু মোহনের নিকট হইতে না আসিত তাহা হইলেও তিনি অস্থির হইতেন, কিন্তু এতটা পরিমাণে নহে । তিনি নিত্য সংবাদপত্র অধ্যয়ন করেন। ভারতে, এমন কি পৃথিবীতে যখন সেখানে কোন প্রসিদ্ধ চুরি-ডাকাতি খবর বাহির হইয়াছে, তিনি পাঠ করিয়াছেন। সে সকল বিষয় র্তাহার কণ্ঠস্থ বলিলেই চলে। তিনি উত্তম রূপেই জানিতেন, দসু মোহন ধরা পড়িয়াছে। সশস্ত্র পাহারায় তাহাকে মাদ্রাজে আনিয়া সুরক্ষিত জেলে আবদ্ধ রাখা হইয়াছে। তিনি আরো জানিতেন তাহার উপর লক্ষ্য রাখিবার জন্য বিশেষ পুলিসের বিশেষ বন্দোবস্ত করা হইয়াছে। মোহন তাহার শত্রু বেকার সাহেবের দ্বারা যে ভাবে গ্রেফতার হইয়াছে, সে খবরও তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে রাখিতেন। কিন্তু দসু্যর তাহার প্রাসাদ সম্বন্ধে এরূপ নিখুঁত জ্ঞান কি করিয়া সম্ভব হইল ভাবিয়া তাহার বিস্ময় ও ভয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। তাহা ছাড়া গুপ্ত ভূগর্ভস্থ কক্ষে কোথা ও কোন সিন্দুকে তিনি কি রাখিয়াছেন, সে সম্বন্ধে এরূপ নির্ভুল জ্ঞান পরম বিস্ময়ের বস্তু নহে কি? রাজকুমার আপনাকে প্রশ্ন করিলেন। ു് সবার উপর—দসু মোহন কখন কাহাকেও যে মিথ্যা ভয় দেখাই #ছে, তাহ রাজকুমারের মনে পড়িল না। রাজকুমার নিত্যবিক্রমের স্মরণ হইল, মোহন কামরূপের মহারাজের প্রাসাদে পত্র লিখিয়া দিন স্থির করিয়া, এমন কি যে সময়ে সে উপস্থিত হইবে জানাইয়াছিল, কাটায় কাটায় ঠিক সেই সময়ে উপস্থিত হইয়া তাহার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিয়াছিল। কেহই মহারাজাকে রক্ষা করিতে পারে নাই। মহারাজ মোহনের পত্রকে একটা বিরাট ঠাট্টা ভাবিয়া নিশ্চিন্ত মনে নিদ্রা দিয়াছিলেন, তাই তাহাকে লুষ্ঠিত হইতে হইয়াছে। : কিন্তু যে-সব রত্বরাজি, মহামূল্য দ্রব্যসমূহ কখনও লোকচক্ষুর বাহিরে আসে নাই, সেসব অতি গোপনীয় বস্তুর খবর দসু মোহনকে কে সরবরাহ করিল? তাহার ভূত্যেরা ? মহারাজার মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়া উঠিল। তিনি মনে মনে বলিলেন, “দীর্ঘ পনেরো বছরের মধ্যে একদিনের জন্যও কোন ভূত্য কোন সন্দেহের অবকাশ রাখে নাই! তাহা ছাড়া তিনি কোন ভৃত্যকে ভূগর্ভস্থ কক্ষে কখনও লইয়াও যান নাই। তবে ?”